শস্য ক্ষেতে সবুজ বিপ্লবের সেই বঙ্গবন্ধু : বিশ্ব রেকর্ডের অপেক্ষায়
‘ধানের চারা বড় হওয়ার পর দেখা গেল বঙ্গবন্ধুর ছবি ভাসছে। এখন শুনছি এটি নাকি বিশ্বের সবচেয়ে বড় শস্যচিত্র। সারা বিশ্বের মানুষ চিনবে। ইতিহাসের ভাগিদার হয়ে গেলাম।’
ইয়াসিন জয়নাল শামস্ , নিউজ ব্যাংক বাংলা ডট কম :
সবুজ বিপ্লবের স্বপ্ন দেখা বঙ্গবন্ধুকে জন্ম শতবার্ষিকীতে এক অনন্য শস্যচিত্রে স্মরণ করছে বাংলাদেশ । বিশ্ব রেকর্ডের অপেক্ষায় আছে ‘শস্যচিত্রে বঙ্গবন্ধু’ । বিশ্বের সবচেয়ে বড় শস্যক্ষেত্র চিত্রকর্মটি হবে ৪০ একর বা ১২০ বিঘা জমিতে। এর মধ্যেই এই জমিতে রোপণকৃত ধানের চারায় বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতির দেখা মিলছে।
আগামী ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনে এই শস্য চিত্রটি উদ্বোধন করা হবে। এর মধ্যে দিয়ে বাংলাদেশ সৃষ্টি করবে নতুন রেকর্ড। এখনই দল বেঁধে অগুনতি মানুষ দেখতে শস্য ক্ষেত্র চিত্রটি।
বগুড়ার শেরপুর উপজেলার ভবানীপুর ইউনিয়নের বালেন্দা গ্রামেই এই মনোহর চিত্রটি গড়ে তুলছেন কৃষক সমাজ ।
অভিভূত কৃষক ও ছুঠে আসা দর্শনার্থীরা। তাঁদের অভিমত, চিত্রটি এমন যেন কোন চিত্রশিল্পী হাত দিয়ে এঁকেছেন এটি।
গত এক মাসের টানা পরিশ্রমে ১২০ বিঘা জমিতে শোভা পাচ্ছে বঙ্গবন্ধুর এই প্রতিকৃতি।
ধানের চারা চাষের মধ্যে দিয়ে দেশে প্রথমবারের মত শস্যের মাঠে বঙ্গবন্ধুর এই ছবি ফুটে উঠেছে।
কৃষকদের কাছ থেকে ৬ মাসের জন্য লিজ নেয়া হয় এর ভূমি। চীন থেকে আমদানি করা হয় বেগুনি ও সবুজ (যা সোনালী বর্ণ ধারণ করবে) দুই ধরনের হাইব্রিড ধানের বীজ , যা রোপণ হয় । আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় রোপণকৃত সতেজ বীজের এই চারা এর মধ্যেই বেগুনি ও সবুজ ধানের রঙ রূপ গ্রহণ করেছে। ফুটে উঠেছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি।
এটিই হবে বিশ্বের সবচেয়ে বড় শস্যক্ষেত্র চিত্রকর্ম , যা আছে বিশ্ব রেকর্ডের অপেক্ষায়।
‘মুজিব জন্মশতবর্ষ উপলক্ষ্যে শস্যচিত্রে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু জাতীয় পরিষদে’র উদ্যোগে এবং ন্যাশনাল এগ্রিকেয়ারের সহযোগিতায় এই ব্যতিক্রমী কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে সরকারি সুত্রে ।
দায়িত্বশীলদের আশাবাদ , গ্রিনেজ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে অন্তর্ভুক্ত হবে বাংলাদেশের জন্য নতুন এই উদ্যোগ ।
বগুড়ার শেরপুর উপজেলার ভবানীপুর গ্রামের শফিকুল ইসলাম ও আব্দুল মালেক জানান , তাঁরা দুইজনেই ৫ এবং ৮ বিঘা জমি লিজ দিয়েছেন ৬ মাসের জন্য। ৬ মাসের জন্য বিঘা প্রতি তারা পেয়েছেন ৯ হাজার করে টাকা। ‘
‘ধানের চারা বড় হওয়ার পর দেখা গেল বঙ্গবন্ধুর ছবি ভাসছে। এখন শুনছি এটি নাকি বিশ্বের সবচেয়ে বড় শস্যচিত্র। সারা বিশ্বের মানুষ চিনবে। ইতিহাসের ভাগিদার হয়ে গেলাম।’
শস্যচিত্রে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি বাস্তবায়ন কমিটি সূত্রে জানা যায়, গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে এর আগে চীনে ২০১৯ সালে শস্য চিত্র তৈরি করা হয়েছিল, যার আয়তন ছিল ৮ লাখ ৫৫ হাজার ৭৮৬ বর্গফুট। বগুড়ার বালেন্দায় গ্রামের এই বঙ্গবন্ধুর শস্যচিত্রটির আয়তন হবে ১২ লাখ ৯২ হাজার বর্গফুট বা ১ লাখ ২০ হাজার বর্গ মিটার।
ন্যাশনাল এগ্রিকেয়ারের এই প্রকল্পের ব্যবস্থাপক সাইফুল ইসলাম বলেন, ইতিমধ্যে ধানের চারা বেড়ে উঠায় শস্যচিত্রে ফুটে উঠেছে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি (ছবি)। জমির খুব কাছ থেকে দেখা না গেলেও কিছুটা উঁচু থেকে এই চল্লিশ একর জমিতে রোপণকৃত ধানের দৃশ্যে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি দেখা যাবে।
‘শস্যচিত্রে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু জাতীয় পরিষদে’র প্রধান পৃষ্ঠপোষক কৃষিবিদ আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম। তিনি জানান, বিশ্বের সর্ববৃহৎ শস্যচিত্র হবে এটি। শস্যচিত্রে বঙ্গবন্ধু প্রথমবারের মতো গ্রিনেস বুকে স্থান পেয়ে নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করবে। পাশাপাশি কৃষকরাও নতুনভাবে উজ্জীবিত হবেন ।
স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় সহ সভাপতি ম আবদুর রাজ্জাক অভিন্ন আশাবাদ করে জানান, গিনেস বুকে রেকর্ড এর জন্য শস্য চিত্রের সব তথ্য কর্তৃপক্ষকে পাঠানো হয়েছে। এখন অপেক্ষা চলছে বিশ্ব রেকর্ড গড়ার।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক প্রধান অতিথি হিসেবে দুই ধরণের ধানের চারা রোপণের মাধ্যমে এই উদ্যোগের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। গত ২৯ জানুয়ারি ধানের চারা রোপণের মধ্যে দিয়ে শস্যচিত্রে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি নির্মাণের কাজ (রূপদান) শুরু হয় ।
‘শস্য চিত্রে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু জাতীয় পরিষদে’র প্রধান পৃষ্ঠপোষক কৃষিবিদ আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিমের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। সভায় প্রধান বক্তা ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল হোসেন। #
newsbankbangla.com
নিউজ ব্যাংক বাংলা ডট কম
উপদেষ্টা সম্পাদক : রিয়াজ হায়দার চৌধুরী