পাস্তুরিত প্রস্তর সময় : সালাহউদ্দিন আহমেদ ও জনতার রাজনীতি

Must Read

আওয়ামী লীগের পর বিএনপি হয়ে উঠেছে  যেন এনসিপির টার্গেট ,  যা তাদের নেতাকর্মীদের কথায় আলোচনায় স্পষ্ট হয়ে উঠেছে…….

বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এদেশের মানুষ বুদ্ধিবৃত্তিক সাহসী গ্রহণযোগ্য নেতৃত্বকে পছন্দ করেন না। বাংলাদেশ নামক ভূখণ্ডে মানুষের এটায় মনে হয় এক ধরনের রোগ। অনেকেই শুধু ইর্ষায় ভোগেন। পরনিন্দা করতে গিয়ে নিজের জীবনেরই সর্বনাশ করে দেন। যে সময়টা তারা পরনিন্দা আর পরের ক্ষতি করার তালে থাকেন, সেই সময়টা  চাইলে দেশ ও মানুষের জন্য অনেক কিছু উপকার করতে পারতেন তারা।সেরকম অপগোষ্ঠির টার্গেট হয়েছেন বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আহমেদ…..

আমি জানি, বঙ্গবন্ধুর আদর্শিক অনুসারী হয়েও আমি কেন সালাহউদ্দিন আহমেদ সম্পর্কে এই বর্ণনা দিলাম, তা নিয়েও বিভ্রান্ত রাজনৈতিক নেতাকর্মী হাল আমলে নিজেদের প্রকৃত রূপ উদ্ভাসিত করা  তাদের অসভ্য-আবাল সমর্থকরা আমাকেও তুলোধুনো করবেন….

 বঙ্গবন্ধুর সমাধি ভাঙার ঘোষণায় এনসিপির সমাবেশকে ঘিরে গোপালগঞ্জে হতাহতের রক্তের দাগ এখনো শুকায়নি। এর মধ্যেই  কক্সবাজারে ফের এনসিপি ছড়িয়েছে উত্তাপ।

২৪ এর আলোচিত- সমালোচিত আন্দোলনে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা সরকারের বিদায়ের পর আন্দোলনকারীদের মৈত্রী জোট বিএনপি ও এনসিপির বিরোধ প্রকাশ্য হয়ে ইতোমধ্যে অনেকের স্বপ্ন হনন ঘটেছে।

মিটফোর্ডে পাথর চাপায় ব্যবসায়ীকে বর্বর হত্যার দগদগে ক্ষত এখনো  অনেকের হৃদয়ে। দেশের বিভিন্ন স্থানে ধর্ষণ লুটতরাজ,  দ্রব্যমূল্য ঊর্ধ্বগতি এবং সামগ্রিক আইনশৃংখলার  অবনতিশীল পরিস্থিতি নাগরিক মনকে ক্রমশ বিষিয়ে তুলছে। 

খোদ এনসিপি ভাবাদর্শের সরকারি উপদেষ্টা ‘প্রস্তর যুগ’ বলে যে সময়টাকে বোঝাতে চাইছেন,সেই সময়টাকে আমি বলব পাস্তরিত প্রস্তর সময়। কোটি মানুষের আশাবাদ কিংবা  ভাবনাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে  গোপালগঞ্জে বুটের তলায় পিষে হত্যার চিত্র বলেন কিংবা দ্রুত লয়ে দেশে সাধারণ মানুষের  নজিরবিহীন নিরাপত্তাহীনতার দৃশ্যপট বলেন,  এই সময়টা ‘স্বপ্নচারী’ জুলাই যোদ্ধাদের দ্বারা পাস্তুরিত অথচ ‘প্রস্তর কাল’ বললে ভুল হবে কি?

এমন সময়ে এও নিঃসন্দেহে বলা চলে, বাংলাদেশের রাজনীতি পড়েছে এক গভীর সংকটে। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সরকারের চ্যালেঞ্জ, অন্যদিকে জুলাই প্রশ্নে অভিন্ন মতাদর্শের জোটে অতি সাম্প্রতিক তীব্র মতভিন্নতা ভবিষ্যৎ রাজনীতিকে ঝুঁকিতে ফেলেছে।

আওয়ামী লীগের পর বিএনপি হয়ে উঠেছে  যেন এনসিপির টার্গেট ,  যা তাদের নেতাকর্মীদের কথায় আলোচনায় স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।

প্রসঙ্গক্রমে এনসিপির কক্সবাজার উত্তাপ উদাহরণ হিসেবে আসতেই পারে।  কক্সবাজারের অগুনতি মানুষের আস্থার প্রতিক, বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আহমেদকে কেন্দ্র করে এনসিপির তরুন নেতার বিতর্কিত মন্তব্যকে ঘিরে বিএনপি-এনসিপি অম্লমধুর উত্তেজনা চলছে।  রাজনীতি সচেতন কেউ কেউ মাধ্যমে এই উত্তেজনাকে ‘সাময়িক মান-অভিমানের নাটক’ বলে অভিহিত করছেন।  তবে যে যাই বলুন না কেন বাংলাদেশের রাজনীতিতে গ্রহণযোগ্য এবং প্রতিনিধিত্বশীল মানুষের নেতৃত্ব টিকিয়ে রাখাটা জরুরী। এই তাগাদাটুকু দল-মত নির্বিশেষে রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের থাকা উচিত।

নতুন প্রজন্ম কিংবা  এই প্রজন্মের নেতৃত্বের খানিকটা সালাহউদ্দিন আহমেদের অতীত সম্পর্কে  জানা উচিত।

তাঁর জীবনচিত্রের চুম্বক তুলে ধরার চেষ্টা করছি। 

জনাব সালাহউদ্দিন আহমেদকে শুধুমাত্র প্রাক্তন  প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া’র সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস) হিসাবে মূল্যায়ন করলে যথার্থ হবে না। ১৯৯১ সালে তিনি তৎকালীন সরকারের এই দায়িত্বটি পালনের আগে

বগুড়া জেলা প্রশাসনে সিনিয়র সহকারী সচিব ছিলেন।

তিনি একজন প্রাক্তন সফল ছাত্রনেতা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নকালে তিনি জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সহ-সভাপতি ছিলেন।  ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির ‘ভারপ্রাপ্ত সভাপতি’ হিসাবেও দায়িত্ব পালন করেন কিছুদিন। ছাত্রনেতা থাকা অবস্থায় জেলও  খেটেছেন।

রাজনৈতিক জীবনের অধ্যায়ে তিনি ১৯৯৬ সালে প্রথমে কক্সবাজার কক্সবাজার জেলা বিএনপি’র আহবায়ক, জেলা বিএনপি’র সভাপতি, কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির যুগ্ম-মহাসচিব এবং  পরবর্তীতে স্থায়ী কমিটির  সদস্য হন দলীয় কাউন্সিলে ।

 সালাহ উদ্দিন আহমদ সক্রিয়ভাবে রাজনীতিতে যোগদান ১৯৯৬ সালে সরকারি চাকরি ছেড়ে। অতঃপর তিনি টানা তিন বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

 কক্সবাজার-১(চকরিয়া-পেকুয়া) আসনের এই গণপ্র প্রতিনিধি বিপুল ভোটের বিজয়ী হয়ে রেকর্ড গড়েন। ২০০১ সালের ১০ অক্টোবর বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার  বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম জিয়ার মন্ত্রিপরিষদে প্রতিমন্ত্রী হন। কক্সবাজার জেলার সে সময়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত ( ইনচার্জ মিনিস্টার ) সালাহ উদ্দিন আহমদই স্বাধীনতার পরে কক্সবাজারের প্রথম মন্ত্রী। ‘পেকুয়া’নামক একটি আলাদা উপজেলাও প্রতিষ্ঠা করেন তিনি।

‘ ওয়ান ইলাভেন সরকারের’ সময়ে কারাবন্দী হন। এরপরে একবার তাঁর অনুপস্থিতিতে তাঁর জীবন সঙ্গী এডভোকেট হাসিনা আহমেদও একই আসনে চারদলীয় জোটের প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

পূর্ববর্তী আওয়ামী লীগ আমলে আটক ( মতান্তরে ঘুম) তিনি ভারতের মেঘালয়ের সিলং শহরে নির্বাসিত থাকলেও  বিএনপি’র সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম তাঁকে  জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য নির্বাচিত করে। দলটির মুখপাত্র হিসেবেও কাজ করেন তিনি।

‘পর্যটনের রাজধানী’ খ্যাত কক্সবাজার ছাড়িয়ে রাজনীতিতে জাতীয় নেতৃত্বে গৌরবের সাথে নিজের অবস্থান গড়ে নেওয়া সফল এই নেতার ব্যাপারে নতুন প্রজন্মের ‘নয়া বন্দোবস্তি’র নেতৃত্বকে শালীনশব্দ মালায়  কথা বলা উচিত- এ কথা যেকোনো সচেতন সভ্য রাজনৈতিক নেতাকর্মী স্বীকার করবেন।

লেখাটির বাকি অংশ পড়ুন NEWS BANK TV
এর ইউটিউব চ্যানেলের নীচে সংযুক্ত লিংকটির পর —

বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এদেশের মানুষ বুদ্ধিবৃত্তিক সাহসী গ্রহণযোগ্য নেতৃত্বকে পছন্দ করেন না। বাংলাদেশ নামক ভূখণ্ডে মানুষের এটায় মনে হয় এক ধরনের রোগ। অনেকেই শুধু ইর্ষায় ভোগেন। পরনিন্দা করতে গিয়ে নিজের জীবনেরই সর্বনাশ করে দেন। যে সময়টা তারা পরনিন্দা আর পরের ক্ষতি করার তালে থাকেন, সেই সময়টা  চাইলে দেশ ও মানুষের জন্য অনেক কিছু উপকার করতে পারতেন তারা।

সেরকম অপগোষ্ঠির টার্গেট হয়েছেন বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আহমেদ ।

আমি জানি, বঙ্গবন্ধুর আদর্শিক অনুসারী হয়েও আমি কেন সালাহউদ্দিন আহমেদ সম্পর্কে এই বর্ণনা দিলাম, তা নিয়েও হাল আমলে নিজেদের প্রকৃত রূপ উদ্ভাসিত করা বিভ্রান্ত রাজনৈতিক নেতাকর্মী ও তাদের অসভ্য-আবাল সমর্থকরা আমাকেও তুলোধোনা করবেন। অস্রাব্য অশ্লীল নানা তীর্যক মন্তব্যে আমাকে আহত করতেও  চাইবেন। যা সাম্প্রতিক রাজনীতিতে একশ্রেণীর রাজনৈতিক কর্মী সমর্থকদের যেন রুটিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।

লেখাটির বাকি অংশ পড়ুন NEWS BANK TV
এর ইউটিউব চ্যানেলের নীচে সংযুক্ত লিংকটির পর —

https://www.youtube.com/watch?v=SKFCtYCSHZ4

রাজনৈতিক সম্প্রীতি কিংবা সামাজিক শিষ্টাচারের বিরুদ্ধে যাওয়া এরকম কর্মী  সমর্থকদের নিয়ে অবশ্য আমি বিচলিত নই।  কেননা তারা বিভ্রান্ত, দেশবিরোধী, সভ্য সজ্জনের রাজনীতি ও সামাজিক ঐকের বিপক্ষের শক্তি।

সচেতন দেশ প্রেমিক নাগরিকদের অবশ্য বিভ্রান্ত না হয়ে এই ভ্রষ্ট পাস্তুরিত প্রস্তর সময়ে জাতীয় স্বার্থে, জনমানুষের স্বার্থে, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের স্বার্থে, রাজনৈতিক- সামাজিক ঐক্য সুনিশ্চিত করা প্রয়োজন ।  সেই প্রয়োজনীয়তা থেকেই আমার এই লেখা।

পরম করুনাময় কিংবা মহান রাব্বুল আলামিন এই জাতিকে হীনমন্য মানুষগুলোর আগ্রাসন মুক্ত রাখুন।

( লেখক : রিয়াজ হায়দার চৌধুরী, সভাপতি, চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নসাধারণ সম্পাদক, পেশাজীবী সমন্বয় পরিষদ, চট্টগ্রাম) 

( ২০/০৭/২০২৫)

- Advertisement -spot_img

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisement -spot_img
Latest News

পুলিশে বহিষ্কৃত হন ২৭ সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলার বাদী !

নিউজ ব্যাংক বাংলা, চট্টগ্রাম : পুলিশ বিভাগ থেকে বহিষ্কৃত হয়েছিলেন চট্টগ্রামের ২৭ পেশাজীবী সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরকারী সেই যুবক। নিজেকে...
- Advertisement -spot_img

More Articles Like This

- Advertisement -spot_img