নিউজ ব্যাংক বাংলা, চট্টগ্রাম :
ঘটনা পরম্পরা সিনেমাটিক হলেও কল্পকাহিনী তা নয়।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) রসায়ন বিভাগের ছাত্রী ধর্ষণ চেষ্টায় একই বিভাগের শিক্ষকের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগকে ঘিরে আলোচনা ওঠেছে তুমুলে। ওই শিক্ষার্থীর সাথে শিক্ষকের ম্যাসেঞ্জার চ্যাট এর মধ্যেও মিলেছে শিক্ষকের অনৈতিকতার আলামত !
সামাজিক মাধ্যমেও অভিযুক্ত শিক্ষকের মুন্ডুপাত করছেন প্রাক্তন শিক্ষার্থী ও ভুক্তভোগীদের অনেকেই।
সহপাঠী ও শিক্ষকরা কেউ কেউ বলছেন, চবি’র এই ঘটনা এক কঠিন বাস্তবতা। বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা চাইছেন , মারাত্মক ট্রমায় থাকা সহপাঠী স্বাভাবিক জীবন পাক। বিচার হোক ধর্ষণ চেষ্টা কিংবা শ্লীলতাহানির।
ঊপুযুপুরী ধর্ষণ চেষ্টার গ্রাস থেকে বেঁচে যাওয়া এই শিক্ষার্থীর বর্ণনা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দায়িত্বশীলদের মনে কতটা দাগ কেটেছে তা এখনো স্পষ্ট নয় । এমনটি ভেবেই তার সহপাঠীরা বলছেন, চবি ওই অধ্যাপকের বিরুদ্ধে ছাত্রীর আনা যৌন নিপীড়নের অভিযোগের পর এখনো কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে আসতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন নিপীড়ন বিষয় সেল । তবে কয়েকবার বৈঠক করেছে সেলটি । অভিযোগের বিষয়ে গভীরভাবে তদন্ত করছেন জানিয়ে গণমাধ্যমে সেলটি বলেছে, বিষয়টি স্পর্শকাতর হওয়ায় তদন্তে আরো সময় দরকার আছে ।
এদিকে, অভিযোগকারী শিক্ষার্থী নিউজ ব্যাংক বাংলাকে বলেছেন , বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ রবি-সোমবারের মধ্যে এ ঘটনার বিহিত করার জন্য আশ্বাস দিয়েছেন। নতুবা আইনানুগ ব্যবস্থা নেবেন বলেও জানান এই শিক্ষার্থী।
বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউটে যৌন নিপীড়ন সেলের বৈঠক শেষ হয় শুক্রবার রাত আটটার দিকে।এসময় সেলের সদস্যরা একথা জানান ।
চবি উপাচার্য প্রফেসর ড. শিরীণ আখতার ও সিন্ডিকেট সদস্য ড. নঈম হাসান চৌধুরী আওরঙ্গজেব সহ কয়েকজন জানালেন, বিষয়টা যেহেতু খুব স্পর্শকাতর তাই খতিয়ে দেখতে সময় দরকার। সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে সঠিক সিদ্ধান্ত আসবে বলে জানান তাঁরা ।
গত বুধবার উপাচার্য শিরীণ আখতারের কাছে নিজ বিভাগের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে লিখিতভাবে যৌন হয়রানির অভিযোগ করেন এক শিক্ষার্থী। অভিযোগটি সম্পূর্ণরূপে অস্বীকার করেছেন অভিযুক্ত শিক্ষক।
নিউজটির বাকি অংশ দেখুন নীচের লিংক ভিডিও এর পর-
জামায়াত..শিবিরের রাজনীতি, আওয়ামীলীগ ও নির্বাচন নিয়ে আলোচিত টকশো :
মেজর জেনারেল অব ইব্রাহিম যা বললেন,
জানতে হলে লিংক চাপুন –
( ভালো লাগলে বন্ধুদের জানাতে লাইক ও শেয়ার দিন, প্লিজ ! )
শিক্ষার্থী তার লিখিত অভিযোগে জানান, অভিযুক্ত শিক্ষকের তত্ত্বাবধানে থিসিস করছিলেন তিনি।
তিনি বলেন,”থিসিস চলাকালীন সময়ে আমি উক্ত শিক্ষক দ্বারা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্নভাবে যৌন হয়রানির শিকার হই৷ সর্বশেষ ১৩ জানুয়ারি, ২০২৪ তারিখে আনুমানিক দুপুর ১২ টার দিকে কেমিক্যাল আনার বাহানা করে আমাকে তার রুমে ডেকে পাঠান। আমি তার রুমে ফ্রিজ খুলে কেমিক্যাল বের করা রত অবস্থায় তিনি আমাকে পিছন থেকে জোরপূর্বক জড়িয়ে ধরে তার হাত ও ঠোঁট দিয়ে আমার গোপনাঙ্গে স্পর্শ করেন। এমতাবস্থায় আমি তাকে ধাক্কা মেরে বের হয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে তিনি রুমের দরজা আটকে আমাকে পুনরায় জোরপূর্বক জড়িয়ে ধরে আমার গোপনাঙ্গে স্পর্শ করেন। আমি উনাকে পুনরায় ধাক্কা মেরে দরজার লক খুলে কোনোরকমে পালিয়ে বাঁচতে সক্ষম হই। “
শিক্ষার্থী আরো বলেন,
” ১৪ তারিখ তিনি আমাকে ও আমার ল্যাবের বাকি দুজন মেয়েকে তার রুমে ডেকে পাঠান এবং বলেন দরজাটা চাপিয়ে দিতে। তারপর তিনি আমাদের তার সাথে সমঝোতায় আসার প্রস্তাব দেন৷ আমরা তার উক্ত প্রস্তাবে রাজি না হয়ে রুম থেকে বের হয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে তিনি তার চেয়ার থেকে উঠে দরজায় লক দিয়ে দরজা আগলে দাঁড়ান যেনো আমরা বের হতে না পারি। তিনি এভাবে প্রায় ২৫ মিনিট আমাদের আটকে রাখেন। অত:পর আমাদের ৩ জনের মধ্যে একজন তাকে বলেন যে, আমি অনেক অসুস্থ বোধ করছি। এমতাবস্থায় তিনি আমাদের তার রুম থেকে বের হতে দিতে বাধ্য হন।
আমি উক্ত অপরাধীর স্থায়ী বহিষ্কার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।”
এদিকে অভিযুক্ত উক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে আগেও বিভিন্নভাবে শিক্ষার্থীরা অভিযোগ তুলেন। তবে সেই সব অভিযোগ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কানে পৌঁছার আগেই নানাকারণে মিইয়ে যায় বলেও জানা গেছে সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে।