ইউনুস ঘুষ দিয়েও ব্যর্থ, ডেভিড বার্গম্যান কী নিবন্ধ লিখবেন ; তথ্যমন্ত্রী

Must Read

নিউজ ব্যাংক বাংলা :

তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘ডেভিড বার্গম্যান বাংলাদেশের রাজনীতি–নির্বাচন নিয়ে একটি নিবন্ধ লিখেছেন। তিনি ড. কামাল হোসেনের মেয়ের জামাই এবং তিনি একজন ইহুদী, যে ইহুদীরা ফিলিস্তিনে মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ সংঘটিত করছে। ডেভিড বার্গম্যানকে একটু জিজ্ঞেস করেন, এ নিয়ে তার কী বক্তব্য। একটি নিবন্ধ যদি তিনি লিখতেন, তাহলে আমরা তার অবস্থানটা জানতে পারতাম।’

গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে চট্টগ্রাম নগরীর দেওয়ানজী পুকুর লেন ওয়াইএনটি সেন্টারে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তথ্যমন্ত্রী এ কথা বলেন।

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের এই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আরো বলেন, গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে আদালত দণ্ডিত করেছে। এরপর আপিল করার শর্তে তাকে আবার জামিনে দেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে দেশে–বিদেশে বিভ্রান্তি ছড়ানোর অপচেষ্টা আছে এবং সরকারকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা হচ্ছে। এখানে সরকার কোনো পক্ষ নয়, মামলাও করেনি। মামলা করেছে গ্রামীণ টেলিকমের শ্রমিক–কর্মচারীরা। সেই মামলায় শাস্তি হয়েছে।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, গ্রামীণ টেলিকমের আইনি বাধ্যবাধকতা রয়েছে যে, লাভের ৫ শতাংশ তার কর্মচারীদের মধ্যে ভাগ করে দেওয়া হবে। এযাবৎ কখনও তা দেওয়া হয়নি। এটি না দেওয়ায় শ্রম আইনের ৪, ৭, ৮, ১১৭ এবং ২৩৪–এর অধীনে মামলা দায়ের করেছে শ্রমিক–কর্মচারীরা। গ্রামীণ টেলিকমের পক্ষ থেকে দুজন শ্রমিক নেতাকে ম্যানেজ করার চেষ্টা করা হয়েছিল এবং দুজন শ্রমিক নেতাকে তিন কোটি করে ছয় কোটি টাকা ঘুষ দেওয়া হয়েছিল। দুজনকে ঘুষ দেওয়ার পরও টাকা না পাওয়ায় সাধারণ শ্রমিকরা মামলা করেছেন। সুতরাং এখানে স্পষ্টত একটি অপরাধ সংঘটিত হয়েছে এবং এই অপরাধ সংঘটিত হবার কারণেই মামলা হয়েছে, শাস্তিও হয়েছে।

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, গ্রামীণ টেলিকমের এক দশকের বেশি সময় ধরে নিয়ম ভঙ্গ, কর ফাঁকি, তার কর্মচারীদের কল্যাণ তহবিল আত্মসাৎ এবং বিভিন্ন অনুমোদিত সংস্থা থেকে তিন হাজার কোটি টাকা অপব্যবহার করার অভিযোগ আছে। ১৯৮৩ সালের গ্রামীণ ব্যাংক অধ্যাদেশ অনুসারে গ্রামীণ ব্যাংকের এমডি সরকার নিযুক্ত হওয়ার কথা ছিল। ১৯৯০ সালের সংশোধনী অনুসারে এমডি নিয়োগের দায়িত্ব বাংলাদেশ ব্যাংকের পূর্বানুমোদন সাপেক্ষে গ্রামীণ ব্যাংকের বোর্ড অব ডিরেক্টরসে স্থানান্তরিত হয়। এই পরিচালক বোর্ডের চেয়ারম্যান ১৪ আগস্ট ১৯৯০ সালে ড. ইউনূসকে এমডি হিসেবে নিয়োগের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদনের জন্য অনুরোধ করেন।

নিউজ বাকি অংশ দেখুন নীচের লিংক এর পর-

তিনি বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক শর্তসাপেক্ষে ড. ইউনূসের নিয়োগে অনাপত্তি দেয়। শর্তগুলো হচ্ছে : ১. এমডির চাকরির শর্তাবলী ১৯৮৩ সালের গ্রামীণ ব্যাংক অধ্যাদেশ ১৪–এর ৪ ধারার প্রবিধান দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হবে। ২. পরিচালক বোর্ড অধ্যাদেশের ৩৬ ধারার অধীনে নিয়ম তৈরি করবে, যা সরকারি গেজেট প্রকাশের পর কার্যকর হবে। ৩. সরকারি চাকরির নিয়ম অনুসারে একজন এমডি ৬০ বছর বয়সের সীমা অতিক্রম করতে পারবেন না। কিন্তু ড. ইউনূসের বয়স যখন ৫৯ বছর, ১৯৯৯ সালের জুলাইয়ে অনুষ্ঠিত পরিচালক বোর্ড তার ৫২তম সভায় আইন ভঙ্গ করে রেজুলেশনে তাকে পরবর্তী আদেশ না হওয়া পর্যন্ত এমডি হিসাবে নিশ্চিত করে। এটি গ্রামীণ ব্যাংক অধ্যাদেশের অনুচ্ছেদ ১৪–এর ৪ ধারার সুস্পষ্ট লক্সঘন। অধিকন্তু, তার এই নিয়োগের অসৎ উদ্দেশ্য পরে প্রমাণিত হয়েছে।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ দণ্ডবিধির ২১ এবং ১২–এর ২ ধারা অনুসারে গ্রামীণ ব্যাংকের এমডিকে একজন পাবলিক সার্ভেন্ট হিসাবে বিবেচনা করা হয়। যেখানে ড. মুহাম্মদ ইউনূস পাবলিক সার্ভেন্ট হিসাবে তার চাকরির শর্তাবলী লক্সঘন করেছেন। একজন পূর্ণ সময়ের সরকারি কর্মকর্তা হিসাবে কাজের জায়গায় তার ঘন ঘন অনুপস্থিতি ছিল এবং সেই অনুপস্থিতির ক্ষেত্রে সরকারের অনুমোদন কখনো নেওয়া হয়নি। গ্রামীণ ব্যাংক থেকে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট, তার পরিবারের সাথে স্বার্থ সংশ্লিষ্ট অনেক প্রতিষ্ঠানে অর্থ স্থানান্তর করা হয়েছে বা মূলধন যোগান দেওয়া হয়েছে। এই সমস্ত কারণেই তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে এবং সেই মামলার প্রেক্ষিতে শাস্তি হয়েছে।

পৃথিবীতে বহু নোবেল লরিয়েটের বিরুদ্ধে দেশে দেশে মামলা হয়েছে। অনেকে শাস্তি ভোগ করেছেন, কারাগারেও ছিলেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ ধরনের অনেক ঘটনা আছে, যৌথভাবে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন, পুরস্কারের অর্থ কে কত টাকা পাবেন, এ নিয়েও নোবেল লরিয়েট একে অপরের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। এ নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানোর কোনো সুযোগ নাই। বাংলাদেশে আদালত স্বাধীন, স্বধীনভাবেই কাজ করেছে।

নোবেল শান্তি পুরস্কারপ্রাপ্ত দেশের একজন জ্যেষ্ঠ নাগরিক ড. ইউনূসের প্রতি সম্মান রেখে তথ্যমন্ত্রী বলেন, নোবেল শান্তি পুরস্কার নিয়ে বহু প্রশ্ন আছে। গাজায় কবরে শান্তি স্থাপন করার জন্য কখন যে বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে নোবেল শান্তি পুরস্কার দিয়ে দেয়, সেটিও অনেকে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। প্রেসিডেন্ট হবার পরপর বারাক ওবামাকে যখন নোবেল শান্তি পুরস্কার দিল, তিনি অবাক হয়ে গেলেন। বললেন, আমাকে কেন দেওয়া হলো? মালালাকে ১৪ বছর বয়সে শান্তি পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। কোন সময় যে ১০ বছরের কাউকে দিয়ে দেয়, সেটি নিয়েও অনেকে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। যাই হোক, তিনি একজন জ্যেষ্ঠ নাগরিক, আমি তাকে সম্মান ও শ্রদ্ধা করি।

ড. ইউনূসকে কখনো শহীদ মিনার কিংবা স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানাতে দেখা যায় না। তিনি কার প্রতিনিধিত্ব করেন?- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে হাছান মাহমুদ বলেন, আমি এককভাবে কারো নাম বলছি না। আমাদের দেশে কিছু লোক আছে, তারা দেশের প্রতিনিধিত্ব করে না, তারা বিদেশিদের প্রতিনিধিত্ব করে। তারা মিশনে মিশনে পার্টিতে যায়, আবার বিভিন্ন দেশের সংস্থা থেকে অর্থ পায় এবং ট্যুরে যায়। তারা তাদের প্রতিনিধিত্ব করে। তারা যেটি বলে সেটিই করে। দুর্ভাগ্য হচ্ছে, আমরা তাদের বক্তব্যগুলো ভালো করে প্রচার করি। এটা না দিলে কিন্তু তাদের বাজারমূল্যটা কমে যেত। আমরাই বাজারমূল্যটা বাড়িয়ে দিই।

বুধবার , ৩ জানুয়ারি ২০২৩

- Advertisement -spot_img

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisement -spot_img
Latest News

নির্বাচন করবেন না অলি আহমদ

নিউজ ব্যাংক বাংলা : আর নির্বাচন করবেন না লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) সভাপতি ড.কর্নেল (অব.) অলি আহমদ বীর বিক্রম।নিজের সন্তানকে...
- Advertisement -spot_img

More Articles Like This

- Advertisement -spot_img