নিউজ ব্যাংক বাংলা, চট্টগ্রাম :
জালিয়াতি ও দুর্নীতির তিলক নিয়ে এক দফা পদোন্নতি পেলেন বেশ ! তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হলেও এখন ফের প্রমোশন চান তিনি। পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক’ থেকে ‘সচিব’ হয়ে এখন হতে চান শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান।
বিষয়টি ‘ওপেন সিক্রেট’ চট্টগ্রামে। তবে এতেই ক্ষান্তি নেই তার । প্রধানমন্ত্রীর হাতে এস এস সি’র ফলাফল তুলে দিতে চান ফলাফল জালিয়াতিতে অভিযুক্ত চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও সচিব নারায়ণ চন্দ্র নাথ ! আগামীকাল ১২ মে প্রধানমন্ত্রীর হাতে এস এস সি পরীক্ষা ২০২৪ এর ফলাফল তুলে দেয়ার জন্য ইতিমধ্যে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন তিনি। এ নিয়ে চট্টগ্রামে শিক্ষাঙ্গনে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়েছে ।
নিউজ/লেখাটির বাকি অংশ দেখুন নীচের লিংক ভিডিও এর পর–
জামায়াত..শিবিরের রাজনীতি, আওয়ামীলীগ ও নির্বাচন নিয়ে আলোচিত টকশো :
মেজর জেনারেল অব ইব্রাহিম যা বললেন,
জানতে হলে লিংক চাপুন –
( ভালো লাগলে বন্ধুদের জানাতে লাইক ও শেয়ার দিন, প্লিজ ! )
অভিযুক্ত এই শিক্ষা বোর্ড কর্তার বক্তব্যের বরাত দিয়ে তার ঘনিষ্ঠরা প্রচার করছেন, প্রধানমন্ত্রীর হাতে ফলাফল তুলে দিতে গিয়ে তাকেই (অভিযুক্ত কর্মকর্তাকে) যেন চেয়ারম্যান এর পূর্ণাঙ্গ দায়িত্ব দেয়া হয়, সে ব্যাপারে তিনি অনুরোধও জানাবেন।
উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ড এর ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান (চলতি দায়িত্ব) হিসেবে কর্মরত বহুল সমালোচিত বোর্ড সচিব নারায়ণ চন্দ্র নাথ এর বিরুদ্ধে ফলাফল কেলেংকারী সহ বিভিন্ন বিষয়ে অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে।
একের পর এক দুর্নীতি শুধু নয়, এ নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ পেলে সেখানে মন্তব্যকারী এক মুক্তিযোদ্ধা শিক্ষাবিদ এবং সাবেক আরেক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে নিজের স্ত্রীকে বাদী করে মামলাও টুকে দেন। মুক্তিযোদ্ধা ড. মুহাম্মদ ইদ্রিস আলী ও সাবেক শিক্ষা বোর্ড সচিব আব্দুল আলীমের বিরুদ্ধে এই মামলার প্রতিবাদে রাজপথে নামেন মুক্তিযোদ্ধা ও চট্টগ্রাম নগরীর প্রতিনিধিত্বশীলরা। তাঁরা আল্টিমেটাম দিয়েছেন। এখন শিক্ষা বোর্ড ঘেরাও প্রস্তুতিতে রয়েছেন।
সর্বশেষ এইচ এস সি পরীক্ষা ২০২৩ এর ফলাফল প্রকাশে নারায়ণ চন্দ্র নাথের বিরুদ্ধে সরাসরি তার সন্তান নক্ষত্র দেবনাথ এর ফলাফলে কারচুপির অভিযোগ উঠে।
চট্টগ্রামের মুক্তিযোদ্ধাদের সমন্বিত মোর্ঢার প্রধান ও বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা গবেষণা কেন্দ্র ও ট্রাস্ট এর চেয়ারম্যান, বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. মাহফুজুর রহমান চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের এই আলোচিত দুর্নীতির বিষয়ে নারায়ণ চন্দ্র নাথের বিষয়ে সরাসরি মন্ত্রী পরিষদ বিভাগে অভিযোগ জানান। মন্ত্রী পরিষদ বিভাগ হতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কাছে এই বিষয়ে তদন্ত করে ১৫ কর্মদিবসের মধ্যে সুনির্দিষ্ট মতামত সহ জানাতে নির্দেশ দেয়া হয়। সেই নির্দেশনার আলোকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের শৃঙ্খলা শাখার উপ-সচিব মো. শাহীনুর ইসলাম স্বাক্ষরিত পত্রের মাধ্যমে ৭ কর্মদিবসের মধ্যে বিষয়টি তদন্ত করে সুস্পষ্ট মতামত সহ জানাতে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরকে নির্দেশ দেয়।গত ১ এপ্রিল উক্ত পত্র প্রেরণের ১৬ দিন পর ১৭ এপ্রিল মাউশির পরিচালক আমির হোসেনকে আহবায়ক করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। সেই কমিটিকে ৭ কর্মদিবসের মধ্যে রিপোর্ট প্রদান করতে বলা হয়। তদন্ত কমিটি গঠনের পর ২৪ দিন অতিবাহিত হলেও এখনো কমিটি তদন্ত কাজই শুরু করেনি।
অভিযোগ উঠে, তদন্তের দীর্ঘসূত্রিতায় নারায়ণ চন্দ্র নাথ একের পর একক তার সন্তানের ফলাফল জালিয়াতির আলামত নষ্ট করে যাচ্ছেন। এর মধ্যে আলামত নষ্টের একটি অডিও ফাঁস হয়ে তোলপাড় শুরু হয়।
নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা যায়, তদন্ত যাতে না হয়, সেজন্য অভিযুক্ত এই কর্তা শিক্ষা বোর্ডের টাকা খরচ করে মরিয়া হয়ে দফায় দফায় তদবির করতে ঢাকায় যাওয়া আসা করছেন । এস এস সি পরীক্ষা ২০২৪ এর ফলাফল প্রস্তুতের গুরুত্বপূর্ণ সময়ে তিনি বিজি প্রেসে যাওয়ার নাম করে ৭ মে মাউশিতে যান তদবির করতে। অথচ বিজি প্রেসে একজন উপ বা সহকারী পরীক্ষা নিয়ন্ত্রককে পাঠানোই যথেষ্ট ছিলো।
উল্লেখ্য, নারায়ণ চন্দ্র নাথ প্রভাব খাটিয়ে তার সন্তান নক্ষত্রকে জিপিএ ফাইভ না পাওয়া সত্বেও চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক কলেজে ভর্তি করান। যেখানে ভর্তির ন্যুনতম স্কোর ছিলো জিপিএ ফাইভ।
শুধু তাই নয়, ২০২১ সালের এইচ এস সি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের ক্ষেত্রে তিনি মারাত্মক দুর্নীতির আশ্রয় নেন বলেও অভিযোগ ওঠে। তিনি তখন ছিলেন পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত হলে তিনি দোষী সাব্যস্ত হন। ক্যাডার কর্মকর্তা হওয়ায় তার বিরুদ্ধে শাস্তি বিধানের দায়িত্ব ছিলো শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের। অভিযোগ উঠে, তদবির করে তিনি সেটাও ধামাচাপা দেন।
একটি তদন্তের ভিত্তিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে লিখিতভাবে চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের ২০২২ ইংরেজি সময়কালের চেয়ারম্যান প্রফেসর মুস্তফা কামরুল আখতার অভিযুক্ত নারায়ণ চন্দ্রকেই ফলাফল জালিয়াতির জন্য ‘প্রধান দায়ী’ বলে উল্লেখ করেন এবং একই তদন্তে সিনিয়র সিস্টেম এনালিস্ট কিবরিয়া মাসুদ খানকে শাস্তি প্রদান করে সেটা মন্ত্রণালয়কে অবহিত করেন। এবং অভিযুক্ত নারায়ন চন্দ্র নাথের ব্যাপারে মন্ত্রণালয়ের ‘দায়িত্বের’ কথাও উল্লেখ করেন সাবেক ওই বোর্ড চেয়ারম্যান।
নিউজ/লেখাটির বাকি অংশ দেখুন নীচের লিংক ভিডিও এর পর–
একই অভিযোগে একজনের শাস্তি হলেও বছরের পর বছর পার হতে চললেও প্রধান দায়ী ব্যক্তি এখনো ধরা ছোঁয়ার বাইরে !
এদিকে, ফলাফল কেলেংকারীতে দোষী সাব্যস্ত একজন ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রীর হাতে এস এস সি পরীক্ষার ফলাফল তুলে দিলে ‘প্রধানমন্ত্রী ও দেশের ভাবমূর্তি মারাত্মক ভাবে ক্ষুন্ন হবে’ বলে শিক্ষাবিদ সহ সচেতন মহল মনে করেন।
অন্যদিকে, এই ধরনের লাগামহীন দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত কর্তা নিয়ন্ত্রিত চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের এস এস সি পরীক্ষা ফলাফল নিয়েও অভিভাবক এবং ফলাফল প্রত্যাশীরা আস্থাহীনতায় ভুগছেন।
এদিকে অভিযোগ অস্বীকার করে শিক্ষা বোর্ডের সচিব (ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান) নারায়ণচন্দ্র নাথ বলেছেন, অভিযোগটি কেন এসেছে তা তার বোধগম্য নয়।
পূর্ববর্তী চেয়ারম্যান প্রফেসর মুস্তফা কামরুল আখতার কর্তৃক শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে লিখিত পত্রে ফলাফল জালিয়াতির জন্য ‘প্রধানত দায়ী’ করা প্রসঙ্গেও নারায়ণ চন্দ্রনাথ অভিন্ন প্রতিক্রিয়া জানান।
তবে কি পূর্ববর্তী এই চেয়ারম্যানের সাথে কোন দ্বন্দ্ব রয়েছে ? – এমন প্রশ্নেও ‘না বোধক’ উত্তর দেন অভিযুক্ত এই শিক্ষা বোর্ড সচিব । দুর্নীতির বিষয়ে গঠিত তদন্ত কমিটি এখনো তদন্ত কাজ শুরু করেনি বলেও স্বীকার করেন এই শিক্ষা বোর্ড কর্মকর্তা।
এসএসসির ফলাফল জমা দেয়ার জন্য লক্ষ্যে নিজের ঢাকায় অবস্থানের কথা স্বীকার করলেও প্রমোশনের তদবিদের বিষয়টিও অস্বীকার করেছেন তিনি। এদিকে,সবার মনে অভিন্ন প্রশ্ন , দুর্নীতিতে একের পর এক অভিযুক্ত ব্যক্তি শাস্তি না পেয়ে ‘পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক’ থেকে ‘সচিব’ পদে পদোন্নতি পেলেন কীভাবে? এত কিছুর পরেও এখন বোর্ড চেয়ারম্যান হতে মরিয়া হবার এত দুঃসাহস ও শক্তির জোর কোথায় ?
( বন্ধুরা, আপনারাও যে কোন লেখা পাঠাতে পারেন নিউজ ব্যাংক বাংলায়। লেখা পাঠিয়ে দিন 01860694240 হোয়াটসঅ্যাপে )