সাইফুল আলম নাইডু, নিউজ ব্যাংক বাংলা:
দেশের বাণিজ্যিক রাজধানী খ্যাত চট্টগ্রাম নগর ভারী বর্ষণ ও পূর্ণিমার অস্বাভাবিক জোয়ারে ডুবে যাচ্ছে বার বার।
এবার গত তিন দিনের জলাবদ্ধতায় পানিতে তলিয়ে যায় নগরের অন্তত ৪০ শতাংশ এলাকা। রাস্তাঘাট, অলিগলি ও নগরের অন্তত ১৫ লাখ মানুষ অসহনীয় কষ্টের শিকার হন বসতঘর ১০ থেকে ১২ ঘণ্টা পর্যন্ত পানিতে ডুবে থাকায়। ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীরা পড়েছেন ক্ষতির মুখে।
কেবল এই চলতি বছরেই সাত মাসে ১০ বার ডুবল চট্টগ্রাম নগর। আগের বছর ডুবে ১২ বার। ভুক্তভোগীদের মতে, গত পাঁচ বছরের মধ্যে এবারের জলাবদ্ধতার ব্যাপকতা ছিল সবচেয়ে বেশি।
দেশের অন্যতম বড় পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জে তেমন ক্ষয়ক্ষতি না হলেও এবারের জলাবদ্ধতায় অলিগলির দোকান, বিপণিকেন্দ্র ও কাঁচাবাজার পানিতে তলিয়ে যায়। দোকানপাটের মালামাল পানিতে নষ্ট হয়ে যায়। তিন দিনে কত টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তার সুনির্দিষ্ট কোনো হিসাব পাওয়া যায়নি। তবে ব্যবসায়ীদের ধারণা, প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কমপক্ষে ১৫০ কোটি টাকা।
জলাবদ্ধতার কারণে শুধু খাতুনগঞ্জ ও আশপাশের এলাকায় এক বছরে ৪৬৩ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানা যায় ২০২১ সালের এক গবেষণায়। তবে এ যাত্রায় রক্ষা পেলেও যেভাবে বৃষ্টি ও জোয়ার হচ্ছে, তাতে ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কায় আছেন খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ীরা।
অনেক বড় বাজেটের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে ভারী বর্ষণ ও জোয়ারের পানিতে জলাবদ্ধতা রোধ কল্পে। ১১ হাজার ৩৪৪ কোটি টাকার কাজ চলছে যথাক্রমে সিটি করপোরেশনের একটি, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) দুটি ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের একটি প্রকল্পের আওতায়। বেশি সুফল আসেনি। অথচ গত ৬ বছরে ৫ হাজার ৭৯০ কোটি টাকা খরচ হয়েছে সে সব প্রকল্পে।
৩৫টি জলকপাটের (স্লুইসগেট) কাজ চলছে ছয় বছর ধরে। নগরীতে জোয়ারের পানি প্রবেশরোধ করতে বিভিন্ন খালের মুখে নির্মানের উদ্যোগ নেয়া মোট ৪০টি জলকপাটের (স্লুইসগেট) মধ্যে মাত্র ৫টির নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে।
সূত্র: চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন, আবহাওয়া অধিদপ্তর, দোকান মালিক সমিতি ও প্রথম আলো ।