চীনের রাষ্ট্রপতিকে ধন্যবাদ
মেট্রোরেল হবে চট্টগ্রামে
আওয়ামীলীগকে ভয় দেখিয়ে লাভ নেই
রিয়াজ হায়দার চৌধুরী, চট্টগ্রাম :
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আমরা দেশের উন্নয়ন করি, আর বিএনপি জামাত দেশ ধ্বংস করে। তাদের ইতিহাস, আগুন দিয়ে জ্যান্ত মানুষ পুড়িয়ে মারার ইতিহাস। আওয়ামীলীগের ২১ হাজার নেতাকর্মী ওরা হত্যা করেছে তারা।’
কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মিত ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল’ উদ্বোধন শেষে শনিবার দুপুরে আনোয়ারায় এক সুবিশাল জনসভায় এ কথা বলেন প্রধনমন্ত্রী।
টানেলটি উদ্বোধন উপলক্ষে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত সমাবেশে সংগঠনের সভাপতি মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমানের সঞ্চালনায় অন্যদের মধ্যে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের,
সংসদীয় উপনেতা মতিয়া চৌধুরী, প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, মাহবুব উল আলম হানিফ, ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ, আওয়ামী লীগের অর্থ ও পরিকল্পনা সম্পাদক ওয়াসিকা আয়েশা খান এমপি, দফতর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী ও
নিউজ/লেখাটির বাকি অংশ দেখুন নীচের লিংক/ভিডিও এর পর-
জামায়াত..শিবিরের রাজনীতি, আওয়ামীলীগ ও নির্বাচন নিয়ে আলোচিত টকশো :
মেজর জেনারেল অব ইব্রাহিম যা বললেন,
জানতে হলে লিংক চাপুন –
( ভালো লাগলে বন্ধুদের জানাতে লাইক ও শেয়ার দিন, প্লিজ ! )
সাধারণ সম্পাদক সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি শাহজাদা মহিউদ্দিন, যুগ্ন সম্পাদক প্রদীপ দাশ, উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এ ছালাম, সাধারণ সম্পাদক শেখ আতাউর রহমানসহ জেলা নেতৃবৃন্দ ও স্থানীয় এমপিরা বক্তব্য রাখেন। ভোর ৬ টা থেকে সমাবেশে দলে দলে মানুষ আসতে শুরু করে। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে শুরু হওয়া এই সমাবেশে শুরু থেকেই স্হানীয় নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।
প্রধানমন্ত্রী তাঁর বক্তৃতায় ‘উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে লুটেরা সন্ত্রাসীদের হাতে যাতে দেশ না যায়’ সেই জন্যে ভোট ও দোয়া চান।
নিউজটির বাকি অংশ দেখুন নীচের লিংক/ছবি/লেখাটির পর-
বিএনপির হুমকি প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজকে ওরা নানা হুমকি দেয়। ওই সমস্ত ভয়-ভীতি আওয়ামীলীগকে দেখিয়ে লাভ নেই ।বরং খালেদা জিয়া ভোট চুরি করেছিল বলেই ১৫ ফেব্রুয়ারি তাকে বাংলাদেশের মানুষ আন্দোলন করে ক্ষমতা থেকে হটিয়েছিল। ওরা ভোট চোর। ওরা জনগণের অর্থ চোর। ওরা খুনি। বিএনপি জামাত মানে হল খুনি হত্যাকারী সন্ত্রাসী। আওয়ামীলীগ শান্তিতে বিশ্বাস করে। উন্নয়নে বিশ্বাস করে। “
নিউজটির বাকি অংশ দেখুন নীচের লিংক/ছবি/ভিডিও এর পর-
ঢাকার বাইরের মানুষের অধিকার নিয়ে
একটি আলোচিত বক্তৃতা :
প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে প্রশ্ন । জানতে হলে লিংক চাপুন –
( ভালো লাগলে বন্ধুদের জানাতে লাইক ও শেয়ার দিন, প্লিজ!
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘খালেদা জিয়া এতিম এর অর্থ এতিমকে না দিয়ে নিজে ব্যাংকে রেখে দিয়ে অর্থ আত্মসাৎ করেছে, তার ছেলে তারেক রহমান বিদেশ পালিয়ে গিয়ে ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মুছলেকা দিয়ে দেশ থেকে ভেগে গিয়েছিল। কোটি কোটি টাকা মানি লন্ডারিং করেছে। সেটার জন্য মামলা হয়েছে। সে চট্টগ্রামে ১০ ট্রাক অস্ত্রচালানের সাথে জড়িত, সেটার জন্য সাজা হয়েছে। গ্রেনেড হামলা করে ২২ জন নেতা কর্মীকে হত্যা করেছে। একুশে আগস্ট হামলার মামলায়ও সাজা প্রাপ্ত।’
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় আসার পরে আজকে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। তাদের আমলে চট্টগ্রাম ছিল সন্ত্রাসের রাজত্ব। আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় আসার পরে চট্টগ্রাম এখন শান্তির জনপদ।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘যেই মানুষের জন্য আমার বাবা রাজনীতি করে জীবন দিয়ে গেছেন, সেই মানুষের জন্য কাজ করে যাবো। সেই মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করব। আমার একটাই কাজ, দেশের মানুষের কল্যাণ করা। আর কোনো চাওয়া পাওয়া নাই । শুধু আপনাদের দোয়া চাই। ‘
তিনি বলেন, নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে স্বাধীনতা পেয়েছেন, নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আজ কর্ণফুলী টানেল পেলেন। নৌকা মার্কায় ভোট দিয়েছেন বলেই এত উন্নয়ন। তাই আগামীতেও নৌকা মার্কায় ভোট চাই।’
এসময় প্রধানমন্ত্রী সবার কাছে হাত তুলে নৌকা মার্কায় ভোট দেয়ার ওয়াদা চেয়েছেন। সবাই তাঁকে হাত তুলে নিরঙ্কুশ সামর্থন দেন।
জনসভায় চীনের রাষ্ট্রপতিকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দক্ষিণ এশিয়ার এটি প্রথম টানেল। শুধু চট্টগ্রাম নয়, বাংলাদেশের আঞ্চলিক যোগাযোগে এটা ভূমিকা রাখবে। এশিয়ান হাইওয়ের সাথে যুক্ত হবে। এই টানেল হয়ে ঢাকা থেকে কক্সবাজার যাওয়ার পথে চট্টগ্রাম শহর হয়ে যানজটের মধ্য দিয়ে যেতে হবে না।’ এ সময় প্রধানমন্ত্রী এর নির্মাণ ও ব্যবস্থাপনায় জড়িত সবাইকে ধন্যবাদ জানান।
প্রধানমন্ত্রী বৃহত্তর চট্টগ্রামে মিরসরাইয়ে বঙ্গবন্ধু শিল্প নগর, আনোয়ারায় বিশেষ অর্থনৈতিক জোন, ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজার হাইওয়ে ৬ লেনে উন্নীত করার প্রকল্প, লালখান বাজার-পতেঙ্গা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েসহ নানা গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প গ্রহণের কথা উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, ‘চট্টগ্রামে মেট্রো রেলও ইনশাল্লাহ করে দেব। চাক্তাই-কালুরঘাট চার লাইনের আউটার রিং রোড সেটিও নির্মাণ হচ্ছে। চট্টগ্রামে বে টার্মিনাল হবে। নেপাল ভুটান ইন্ডিয়া ও যাতে চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহার করতে পারে সেই পদক্ষেপ নিয়েছি। ওয়াসার বহু প্রকল্প এবং জলাবদ্ধতা দূর করতে ইতোমধ্যে ১১ হাজার কোটি টাকার একটি প্রজেক্ট আমরা নিয়েছি। চট্টগ্রাম বাণিজ্যিক রাজধানী। সেই হিসেবে এসব আমরা তৈরি করছি ।’
তিনি চট্টগ্রামে সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক, হাইটেক পার্কসহ চট্টগ্রামে সরকারের গৃহীত নানা প্রকল্পের কথা
উল্লেখ করে বলেন, ‘দোহাজারী রামু কক্সবাজার রেললাইন প্রায় সম্পন্ন। শীঘ্রই কক্সবাজার যাবো। মহেশখালীতে ইকোনমিক জোন ও মাতারবাড়িতে ডীপ সি পোর্টসহ নানা প্রকল্প হবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বয়স্ক ভাতা, স্বামী নিগৃহীত ও বিধবা ভাতা, প্রতিবন্ধি ভাতা, বিনা পয়সার বই, বৃত্তি উপবৃত্তি, মোবাইল ফোন চালুসহ আজ বাংলাদেশ ডিজিটাল বাংলাদেশ। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ উদ্বোধন করেছি। ২ শীঘ্রই উদ্বোধন করব। সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে এই সন্দ্বীপেও বিদ্যুৎ নিয়ে গেছি । বহুমুখী উন্নয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে বাংলাদেশকে আমরা উন্নত করছি । একসময় গরিবের নুন ভাত খাওয়ারও সুযোগ ছিল না। আজকে আল্লাহর রহমতে সেই ভাতের কষ্ট নাই।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দক্ষিণ এশিয়ায় এরকম এত বড় টানেল আজকে প্রথম। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের বাংলায় একটি মানুষও গৃহহীন থাকবে না। ভূমিহীন থাকবে না। প্রত্যেক মানুষকে আমরা বিনা পয়সায় ঘর করে জীবন জীবিকার ব্যবস্থা করে দিচ্ছি। বিনা পয়সায় ঘর দেওয়া আমরাই শুরু করেছি। ৯১ সালের ঘুর্ণিঝড়ে ভূমিহীন মানুষকে খুরুশকুলে ভূমি দিয়েছি।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের যুব সমাজের জন্য বহুমুখী ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করছি। যারা বিদেশে যান, দয়া করে আপনাদের কাছে অনুরোধ, দালালকে টাকা দিয়ে যাবেন না। আমরা প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক করে দিয়েছি, কর্মসংস্থান ব্যাংক করে দিয়েছি, জামানত ছাড়া ঋণ পাবেন এবং বিদেশে যেতে পারবেন, নিজেরা ব্যবসা-বাণিজ্য করতে পারেন। দেশে ছয় লক্ষ ফ্রিল্যান্সার আছে। বিভিন্ন ভাতার আমরা ব্যবস্থা করে দিয়েছি।’
প্রধনমন্ত্রী বলেন, ‘বিশ্বব্যাপী আজ অর্থনৈতিক মন্দা। ইউক্রেন রাশিয়ার যুদ্ধের পরে স্যাংশন ও পাল্টা স্যাংশন চলছে। একারণে জিনিপত্রের দাম কিছুটা বেড়েছে। এক কোটি মানুষকে পারিবারিক কার্ড দিচ্ছি, সে কার্ডের মাধ্যমে সর্বনিম্ন দামে চাল ডাল নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস কিনতে পারবেন। দরিদ্র নিম্নবিত্ত মানুষের জন্য আমরা নানা পদক্ষেপ নিচ্ছি। গ্রাম পর্যায়ে পর্যন্ত রাস্তাঘাট করে দিচ্ছি। পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে সারা চট্টগ্রামে যত উন্নয়ন হয়েছে, আগের কোন সরকারের আমলে তা হয়নি। করোনার সময় বিনা পয়সায় টিকা দিয়েছি।’
তিনি আবেগ আপ্লুত কণ্ঠে বলেন, ‘আমি তো বাবা মা ভাই সব হারিয়েছি। বাবা ভাই হত্যার বিচার করতে পারতাম না। কারণ জিয়াউর রহমান ইনডেমিনিটি অধ্যাদেশ দিয়েছিল। খালেদা জিয়া ভোট চুরি করে পার্লামেন্টে খুনিদের বসিয়েছিল। বাবা মা হারিয়ে, ভাই হারিয়ে শুধু আমার ছোট বোনকে নিয়ে বাংলাদেশে এসেছিলাম এমন একটি সময়, যখন যুদ্ধাপরাধীরাও ক্ষমতায়।’
এর আগে বেলা ১১টা ৪০ মিনিটে টানেলের উদ্বোধনী ফলক উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রী। ১২টা ৫০ এর দিকে পতেঙ্গা প্রান্ত থেকে টানেলের ভেতর দিয়ে দক্ষিণের আনোয়ারা প্রান্তে আসে প্রধানমন্ত্রীর গাড়িবহর। ১২টার দিকে প্রথম ব্যাক্তি হিসেবে টানেলের টোল পরিশোধ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি নিজের বহরের গাড়িগুলোর টোলও দেন। এরপর আনোয়ারা প্রান্তে টানেলের নিরাপত্তাসহ যাবতীয় ট্যাকনিকেল দিক পরিদর্শন করেন প্রধানমন্ত্রী।
এরপর ১২টা ৪০ এর দিকে সমাবেশস্থলে প্রবেশ করেন প্রধানমন্ত্রী। এ সময় তিনি স্মারক ডাকটিকেট ও মুদ্রা অবমুক্ত করেন। একইসাথে চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের পাঁচটি প্রকল্পসহ বেশকিছু প্রকল্প উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। পরে জনসভায় আগতদের উদ্যেশ্যে ভাষণ দেন শেখ হাসিনা। #
.