ধনীকের খাবার, হাকিমের স্বাদ ও এগিয়ে চলা দেশ

Must Read

দামী ও চকচকে প্লেটে খাবার নয়,প্রকৃতপ্রস্তাবে বিষ পরিবেশন করা হয়েছে অবলীলায়, স্মার্টলি এবং প্রকাণ্ড আত্মবিশ্বাসের সাথে। ভাবা যায়….

চট্টগ্রামের এক সময়কার নন্দিত মহানগর হাকিম ও বর্তমানে বান্দরবানের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান সামাজিক মাধ্যমে লিখলেন দারুন সত্য কথন। তাঁর নিজের অভিজ্ঞতার আলোকে চাটগাঁইয়া ধনীদের আতিথ্য  বর্ণনা করতে গিয়ে তুলে এনেছেন রূঢ় বাস্তবতা।

লিখেছেন, ‘অনেক অসচ্ছল মানুষের মাঝে আমি গ্রেটনেস দেখেছি। কিন্তু অনেক ধনীর মধ্যে তা পাইনি।বিশেষ করে আমাদের চাটগাঁইয়া ধনীদের মধ্যে ওটা নাইঈ।বরং অতি আত্মমর্যাদাবোধ  দেখেছি। যা কোন  কোন সময় আত্মঅহংকারের সীমা অতিক্রম করে যায়।

এটা আসলে মাত্রাতিরিক্ত শোঅফ। যা ইচ্ছাকৃতভাবে করা হয়। উনাদের অনেক কিছুই অন্ত:সারশূন্য।কোন প্রাণ নেই। উনারা এগুলো পরোয়াও করেন না।কারণ টাকা থাকলে ক্ষমতা থাকে। টাকা ও ক্ষমতা থাকলে সমাজের মানুষ কি ভাবলো তা আর ভাবা লাগে না।এটা এজন্যই হয় যে,টাকা আর ক্ষমতা লজ্জাকে বিদায় করে দেয়।অন্য মানুষের  ভালো লাগা, খারাপ লাগা,আবেগ অনুভূতি ইত্যাদিকে যখন তখন লাত্থি মারা যায়।অন্তত: এদেশে ত বটেই।

অনেক অসচ্ছল মানুষের বাসায় গেছি,তাঁরা বাসার  সবচেয়ে ভালো খাবারটা দিয়েই মেহমানদারি করার চেষ্টা করেছেন। ধনীদের বাসায় গিয়েছি, পচা বাসি মিষ্টি, ছয় মাসের পুরনো বিরানি গরম করে সামনে দিয়েছেন। মাংসের টুকরোর মাঝখান এবং ভাতের ঠিক মধ্যবর্তী অংশ তখনও ঠাণ্ডা। প্লেট কিন্তু অনেক দামী।

দামী ও চকচকে প্লেটে খাবার নয়,প্রকৃতপ্রস্তাবে বিষ পরিবেশন করা হয়েছে অবলীলায়, স্মার্টলি এবং প্রকাণ্ড আত্মবিশ্বাসের সাথে। ভাবা যায়!’

   হাকিম মাহবুব সাহেব সামাজিক মাধ্যমে এমনটি লিখলেন।‌ তবে এই সমাজ কি আর তাঁর প্রত্যাশিত সমাজের মতো আছে ?

ক্ষমতায়ন, দলবাজি, আত্মীয়করণ, দুর্নীতির লোলুপ যাত্রায় প্রশাসনিক- অপ্রশাসনিক সমর্থন ধনীক শ্রেণিকে বেপরোয়া করে তুলেছে।‌

ধনীক শ্রেণীর বেপরোয়া ভাবের কথা তিনি যথার্থই তুলে ধরেছেন। তবে তা কিন্তু শুধুমাত্র চট্টগ্রামের আঞ্চলিক গণ্ডিতে নয়। ‌শুধু চাটগাইয়া ধনী নয়, সারা দেশের সিংহভাগ ধনীরই এখন এমন অবস্থা। ধনী রাজনীতিবিদ, ধনী আমলা, ধনি বিচারপতি, ধনী আইনজীবী , ধনী সাংবাদিক কিংবা অন্য যে কোন পেশাজীবী বা শ্রেণি প্রতিনিধিত্বশীলদের ঘরবাড়িও এর থেকে বাইরে নয়।

এসবের গোড়ায় আছে, প্রধানত পারিবারিক শিক্ষা বা বংশ মর্যাদাবোধের বিষয়টি।

‘..মাংসের টুকরোর মাঝখান এবং ভাতের ঠিক মধ্যবর্তী অংশ তখনও ঠাণ্ডা। প্লেট কিন্তু অনেক দামী …! ‘ এটাও সম্ভব !!

দেখা যাবে , এই ধরনের লোকদের বেশিরভাগই জাত গোষ্ঠী বংশ ঠিক নেই।  নতুবা পারিবারিক শিক্ষার অভাব । কিন্তু আছে অঢেল বিত্ত।

ন্যায় হীনতার সংস্কৃতি এবং রুচির চরম দুর্ভিক্ষ এদের বিত্তশালী, আর্থিক বলবান করতে সহায়তা করেছে।‌

নিউজটির বাকি অংশ দেখুন নীচের লিংক ভিডিও এর পর-

ঢাকার বাইরের মানুষের অধিকার নিয়ে একটি আলোচিত বক্তৃতা :  প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে প্রশ্ন জানতে হলে লিংক চাপুন –

( ভালো লাগলে বন্ধুদের জানাতে লাইক শেয়ার দিন, প্লিজ!

একটা সময় ছিল যখন ভাবতাম, সাম্যবাদী সমাজ চিন্তায় জাত গোষ্ঠী বংশ শ্রেণি পরিচয়, এগুলো বিবেচনা মানে এক প্রকার বৈষম্য।‌ কিন্তু এখন বুঝতে পারি শ্রেণীভেদে মসৃন সমাজের অনিবার্যতা, আবশ্যিকতা  রয়েছে। তবে মননে শ্রেণী বৈষম্য প্রত্যাশিত নয় ।‌

 সামাজিক আচার কিংবা শিষ্টাচার প্রধানত পরিবার থেকেই আসে। অনেকে পারিবারিক জাত গোষ্ঠীর গন্ডি পেরিয়ে সমাজের অনেক উঁচুস্থরে উঠে গেলেও পারিবারিক অশিক্ষার প্রভাবটা তার জীবন ধারায় থেকেই যায়। হাকিম সাহেবের দেখা চাটগাঁইয়া কথিত সেই ধনিক শ্রেণী হয়তো তেমনই।অবশ্য সবাই নন।‌ এমন ধনিক শ্রেণীর অমানবিকতা ও বিবেকহীনতার ধারায় নিরস নির্বাক  হয়ে আছে বাংলাদেশ ।‌ – ০৮:১১(০১/০৪/২০২৪)

 (রিয়াজ হায়দার চৌধুরী: সাবেক সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক, চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়ন – সিইউজে, সাবেক সিন্ডিকেট সদস্য, চট্টগ্রাম মেডিকেল ইউনিভার্সিটি )

- Advertisement -spot_img

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisement -spot_img
Latest News

তারেক রহমানকে দেশে ফেরার সুযোগ দিতে হবে : মির্জা ফখরুল

নিউজ ব্যাংক বাংলা: বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, কোনো রকম টালবাহানা সহ্য করা হবে না। সমস্ত মামলা প্রত্যাহার...
- Advertisement -spot_img

More Articles Like This

- Advertisement -spot_img