রিফাত ফাতিমা তানসি
চতুর্দিকে চাপা কান্নার সুর,
অস্থির চিৎকারেও রূপ নিয়েছে তা।
থেকে থেকে ক্রোধের গর্জন!
ফিসফাস শব্দও শোনা যায়।
এত গুঞ্জন কীসের!
দেখি তো।
এই তো, কিছুক্ষণ আগে এখানে ঘটে গেল
বাঙালি ইতিহাসের সবচেয়ে ন্যক্কারজনক, ঘৃণ্য একটি ঘটনা!
যার বর্ণনা দেওয়ার ভাষা জানা নেই হয়তো কারও!
তাই তো সকলের এত আর্তনাদ!
এত হাহাকার!
গগনবিদারী ক্রন্দন!
সকলের মুখের ভাষাটুকু শুধুমাত্র নয়নে গিয়ে ঠেকেছে।
কেউ কারও কোনও প্রশ্নের জবাব দিতে পারছে না তো!
কী বা জবাব দেবে!
এতদিন যাঁর কাছে ছিল সমস্ত বাঙালির প্রশ্নের উত্তর,
যাঁর কাছে ছিল সব সমস্যার তড়িৎ সমাধান,
যিনি বজ্রকন্ঠের হুংকারে চারদিক দাপিয়ে বেড়াতেন,
যাঁর চোখেমুখে খেলা করত প্রখর দীপ্তির ঝলকানি!
আজ কী হয়েছে তাঁর!
কই, তাঁর চোখ-মুখ সব যেন থমকে গিয়েছে হঠাৎ!
আজ তো তাঁর কন্ঠরোধ হয়ে গিয়েছে!
তাঁর পায়ের শব্দ পাওয়া যাচ্ছে না কোথাও!
কী হলো তাঁর!
নিথর-নিস্তব্ধ হয়ে পড়ে রয়েছে তাঁর দেহখানা।
আর লাল রক্তের বন্যা বয়ে যাচ্ছে তো সারা ঘর জুড়ে;
বেয়ে বেয়ে এসেছে সিঁড়িতেও।
সেই সাথে প্রকৃতিতেও নেমে এসেছে যেন অদ্ভুত এক নীরবতা…
একি! তাঁর সাথে তো দেখি তাঁর পুরো পরিবারও একই অবস্থায় পড়ে আছে!
কী বীভৎস দৃশ্য!
তাকানো যাচ্ছে না!
ও হ্যাঁ, তাঁর তো দুজন কন্যাসন্তান রয়েছেন।
তাঁদেরকে দেখতে পাচ্ছি না তো!
তাঁরা কই?
যাক বাবা;
তাঁরা অন্তত বেঁচে গেলেন এই নির্মম হত্যাকান্ডের হাত থেকে!
এই বর্বরতার হাত থেকে!
তাঁর উজ্জ্বল বংশের একমাত্র নিদর্শন হিশেবে বেঁচে রইলেন তাঁরা!
আচ্ছা, তিনি কি সত্যিই মরে গিয়েছেন!
না তো,
তিনি কি মরতে পারেন!
শুধুমাত্র তাঁর দেহখানারই তো প্রস্থান ঘটেছে।
তিনি রয়েছেন
সর্বদিকে।
সেখান থেকে দেখছেন সবকিছু।
কোটি বাঙালির হৃদয়ে তিনি জাগ্রত
অবিরত।
তিনি তো সকলের চক্ষুমণি হয়ে রয়েছেন, থাকবেন চিরকাল।
তাঁর তো কখনও মৃত্যু হয় না!
হতে পারে না!
তিনি কে?
কে তিনি?
তিনি আর কেউ নন।
তিনিই তো
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
( পরিচিতি :
রিফাত ফাতিমা তানসি । মা মোছাম্মৎ নাসিমা আক্তার এবং বাবা মোহাম্মদ নুরুল আলম এর পাঁচ সন্তানের মধ্যে চতুর্থ সন্তান । পরবর্তীতে যাঁর বিয়ে হয় কর্মশীল ব্যাংকার আনিসুজ্জামান খান চৌধুরীর সাথে। তাঁদের দুই সন্তান যথাক্রমে মোহাম্মদ মেহভীশ ফারসীন খান ও মোহাম্মদ মেহরীশ আজভীন খান।
চটগ্রামে জন্মগ্রহণকারী রিফাত ফাতিমা তানসি লেখালেখিকে ভীষণ ভালোবাসেন। লেখালেখির শুরুটা হয়েছিল শখ থেকে, এরপর সেটি নেশায় রূপান্তরিত হয়।
অনেকগুলো কবিতা, ছড়া, গল্প লেখা হয়েছে তাঁর। তাঁর লেখা ছাপানো হয়েছে দেশের বিভিন্ন জনপ্রিয় পত্রিকায়, ম্যাগাজিনে, সংকলনে এবং দেশের বাইরের ম্যাগাজিন, সংকলনেও। তাঁর কিছু নির্বাচিত কবিতা নিয়ে প্রকাশিত হয়েছে একক কবিতার বই। যার নাম “জ্যোৎস্নায় হেঁটে যায় কবিতারা”।
তিনি ব্যক্তিগতভাবে একটি কলেজে পড়ান। আবৃত্তি করতে খুব ভালোবাসেন। বোধন আবৃত্তি পরিষদের একজন সদস্য তিনি। ছোটোবেলা থেকে সংস্কৃতি এবং সৃজনশীল কাজের বিভিন্ন শাখাতে চমৎকার বিচরণ রয়েছে তাঁর।
ব্যক্তিজীবনে তিনি নিজস্ব ডিজাইনিং এবং হোমমেইড কুকিং-বেইকিং ইত্যাদি সংক্রান্ত ওনলাইন গ্রুপের মাধ্যমে পেশাগতভাবে কাজ করে যাচ্ছেন, যেগুলোর শুরুটাও হয়েছিল বেশ ক’বছর আগ থেকে।