ইতিহাসের মহানায়ক বঙ্গবন্ধু : আবিদা আজাদ

Must Read

হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালী ,
হে ক্ষণজন্মা নেতা ,
তোমার জন্য পেয়েছি মোরা
প্রানের স্বাধীনতা।
তুমি না হলে বাংলাদেশ হতো না।‌
হে চিরঞ্জীব নেতা,
তাই বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ
একই সুতোয় গাঁথা ..’

১৭ই মার্চ বাঙালির স্বাধীন রক্তিম সূর্যের উদয়। ১৯২০সাল গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় শেখ লুৎফর রহমান ও সায়েরা খাতুনের কোল আলোকিত করে বাংলার আকাশে উজ্জ্বল নক্ষত্র হয়ে আবির্ভাব ঘটেছিল এই মহাপুরুষের। যার হাত ধরেই এসেছে দেশের স্বাধীনতা। কে জানতো, সেদিনের সেই ছোট্ট ডানপিটে “খোকা”ই হবে বিশ্বনন্দিত হাজার বছরের “শ্রেষ্ঠ বাঙালী” ।‌
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শুধু একটি নাম নয়, একটি ইতিহাস। যে ইতিহাস রচনা করেছে হাজার বছরের
শৃঙ্খল মোচনের এক অমর মহাকাব্য, প্রজ্জ্বলিত এক নক্ষত্র। অগনিত মানুষের ভালবাসার এক প্রস্ফুটিত গোলাপ বঙ্গবন্ধু।

বাঙালির অহংকারের সাতকাহন, আত্মমর্যাদার প্রতীক বঙ্গবন্ধু বাঙালীর চেতনার রাজ্যে মুকুটহীন রাজা। ছাত্র জীবন থেকে তিনি রাজনীতির সাথে জড়িয়ে পড়েন। তাঁর রাজনৈতিক জীবনের ২৩ বছরে প্রায় ১৪বার কারাবরণ করতে হয়েছে।

১৯৪০ সাল থেকে বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক জীবন শুরু। ১৯৫৪ সালে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান যুক্তফ্রন্টের সাধারণ নির্বাচনে জয়ী হলে তিনি অন্যতম মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। মাত্র ৩৩বছর বয়সে সর্ব কনিষ্ঠ এম এল এ থেকে মন্ত্রীত্ব লাভ করেন।

বাঙালির স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে জাতির পিতার অবদান ছিল অতুলনীয়। ১৯৪৮ সালে মাতৃভাষার দাবিতে গঠিত ‘সর্ব দলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদে’র নেতৃত্বসহ ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন, ১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ১৯৫৮ সালের জেনারেল আইয়ুব খানের সামরিক শাসন বিরোধী আন্দোলন, ১৯৬২ সালের শিক্ষা কমিশনের বিরুদ্ধে আন্দোলন, ১৯৬৬ সালের ৬ দফা আন্দোলন, ১৯৬৯ সালের গণ-অভ্যুত্থান, সর্বোপরি ১৯৭০ এর নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নিরংকুশ বিজয়।এই সবই হয়েছিল তাঁর ধারাবাহিক নেতৃত্বে।

লেখাটির বাকি অংশ দেখুন নীচের লিংক/ছবি/ভিডিও এর পর-

জামায়াত-শিবিরের রাজনীতি, আওয়ামীলীগ ও নির্বাচন নিয়ে আলোচিত টকশো :
মেজর জেনারেল অব ইব্রাহিম যা বললেন,
জানতে হলে লিংক চাপুন –
( ভালো লাগলে বন্ধুদের জানাতে লাইক ও শেয়ার দিন, প্লিজ ! )

১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ বাঙালী জাতির জীবনে এক অবিস্মরনীয় দিন। এদিনে ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে লক্ষ জনতার স্বতঃস্ফূর্ত সমাবেশে বঙ্গবন্ধু জাতির উদ্দেশ্যে এক গুরুত্বপূর্ণ ভাষন দেন। কি আশ্চর্য্য! মাত্র ১৮ মিনিটের বঙ্গবন্ধুর সংক্ষিপ্ত ভাষনে পাকিস্তানের ২৩ বছরের রাজনীতি ও বাঙালির বঞ্চনার ইতিহাস ব্যাখ্যা, পাকিস্তান রাষ্ট্রের স্বরূপ ব্যাখ্যা, অসহযোগ আন্দোলনের পটভূমি বিশ্লেষণ ও বিভিন্ন নির্দেশ ঘোষণা। মূলত সেদিনই ছিল স্বাধীনতার মূলমন্ত্র। দীর্ঘ ৯মাস রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে ৩০লক্ষ শহীদ ও ৩লক্ষ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে অর্জিত একটি স্বাধীন দেশ, লাল সবুজের পতাকা ও সংবিধান উপহার দিয়েছেন।বিশ্ব সভায় বাঙালিকে আত্মপরিচয় দিয়ে গর্বিত জাতি হিসেবে মাথা উঁচু করে চলার ক্ষেত্র রচনা করেছেন।

প্রকৃত পক্ষে ১৯৭৩ সালে আলজেরিয়ায় অনুষ্ঠিত জোট নিরপেক্ষ সম্মেলনে ভাষন দিতে গিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেছিলেন, “পৃথিবী আজ দুই ভাগে বিভক্ত। একভাগে শোষক, শ্রেনী আর একভাগ শোষিত। আমি শোষিতের দলে। “

-এই ভাষনের পর কিউবার প্রেসিডেন্ট ফিদেল কাস্ত্রোর সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর বৈঠক হয়।সেখানে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে বলেছিলেন, ‘তুমি আজ যে ভাষন দিয়েছ, তারপর থেকে সাবধানে থেকো। আজ থেকে তোমাকে হত্যার জন্য একটি বুলেট তোমার পিছু নিয়েছে “।

বিচক্ষণ ফিদেল কাস্ত্রোর সেদিনের কথাটি সত্যিই হয়ে যায় ঠিক দুই বছরের মাথায়।
ওই বৈঠক শেষে ফিদেল কাস্ত্রো বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে বলেছিলেন –
” আমি হিমালয় দেখিনি, বঙ্গবন্ধুকে দেখেছি। তার ব্যাক্তিত্ব ও নির্ভীকতা হিমালয়ের মতো। এভাবেই তার মাধ্যমে আমি হিমালয়কে দেখেছি। “

১৫ই আগষ্টের হামলায় বঙ্গবন্ধু নিহত হওয়ার পর শোক প্রকাশ করে কাস্ত্রো বলেন, শেখ মুজিবের মৃত্যুতে বিশ্বের শোষিত মানুষ হারাল তাদের মহান নেতাকে, আমি হারালাম একজন অকৃত্রিম বিশাল হৃদয়ের বন্ধুকে।

স্বাধীন বাংলার রূপকার বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ আজ অভিন্ন সত্ত্বায় পরিণত হয়েছে। যতদিন বাংলাদেশ ও বাঙালি থাকবে ততদিন বঙ্গবন্ধু সবার অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে। এদেশের স্বাধীনতার সমুজ্জ্বল ইতিহাসে শেখ মুজিব অমর অক্ষয়। কুচক্রীরা যতই ইতিহাস বিকৃত করার ঘৃণ্য প্রয়াসে মগ্ন থাকুক না কেন, বাঙালির হৃদয় থেকে বঙ্গবন্ধুর নাম মুছে ফেলার সাধ্য আছে কার?

তাই অন্নদাশংকর রায়ের কন্ঠে কন্ঠ মিলিয়ে কবিতার ভাষায় বলতে বড় সাধ হয়_

” যতদিন রবে পদ্মা মেঘনা গৌরী যমুনা বহমান
ততদিন রবে কীর্তি তোমার শেখ মুজিবুর রহমান।
দিকে দিকে আজ অশ্রুমালা রক্তগঙ্গা বহমান—
তবু নাই ভয় হবে হবে জয়, জয় মুজিবুর রহমান। “

স্বাধীনতার পর একটি যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশ গড়ে তোলার জন্য মাত্র সাড়ে তিন বছর সময় পেয়েছিলেন তিনি। ১৯৭৫ এর ১৫ই আগষ্ট দেশী এবং আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রকারী কতিপয় বাঙালি কিছু সেনা অফিসারের বুলেটের আঘাতে স্বপরিবারে মৃত্যুবরন করেন।

লেখক পরিচিতি:

আবিদা আজাদ। নারী নেত্রী।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সদ্য সাবেক নির্বাচিত সংরক্ষিত ওয়ার্ড ( ৯,১০,১৩নং ওয়ার্ড ) কাউন্সিলর। চট্টগ্রাম ওয়াসা’র প্রাক্তন বোর্ড সদস্য।‌ বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামীলীগ, চট্টগ্রাম মহানগরীর এই কার্যনির্বাহী সদস্য একই সংগঠনের উত্তর কাট্টলী ওয়ার্ডের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এবং পাহাড়তলী থানা শাখার মহিলা সম্পাদক ছিলেন। কনজ্যুমার এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রাম সহ-সভাপতি তিনি। এছাড়া মহিলা উন্নয়ন সংস্থা চট্টগ্রাম, “অর্জন” এর সভাপতি। সদস্য হিসেবে আছেন জেলা শিল্পকলা একাডেমি, নারী মুক্তিযোদ্ধা (বীরাঙ্গনা) যাচাই-বাছাই সার্চ কমিটি, শিশু কল্যান বোর্ড, জাতীয় সমাজকল্যান পরিষদ, চট্টগ্রাম (২০০৯-২০১৬ইং )।
উত্তর কাট্টলী বিশ্বাস পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি, আকবর শাহ’র “অদিতি ” সংগীত নিকেতন সভাপতি, পাহাড়তলীর “বীজন” নাট্য গোষ্ঠী’র সভাপতিও । এছাড়াও তিনি চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতাল ও চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ “রোগী কল্যান সমিতির আজীবন সদস্য, চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতাল “নার্সিং বোর্ড” এর নির্বাহী সদস্য।‌

সংসারী হয়েই বি এ পাশ করেন আবিদা আজাদ । উত্তর কাট্টলী এলাকার কুতুব বাড়ীর বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম আবুল কালাম আজাদের স্ত্রী তিনি। তাঁদের দুই সন্তান।‌ মেয়ে শিক্ষক। ছেলে ব্যাংকার। এই নারী নেত্রীর স্বামী ২০০৬ সালে ১৬ই নভেম্বর মৃত্যুবরন করলে সংসার ও সংগঠন সমানে চালিয়ে গেছেন অনেক প্রতিকূলতা জয় করেই।

ঢাকার বাইরের মানুষের অধিকার নিয়ে একটি আলোচিত বক্তৃতা :  

প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে প্রশ্ন । জানতে হলে লিংক চাপুন –

( ভালো লাগলে বন্ধুদের জানাতে লাইক ও শেয়ার দিন, প্লিজ!)

- Advertisement -spot_img

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisement -spot_img
Latest News

পাপিয়া সারোয়ার : পরানের গহীন ভিতরে

কিশোরী আমোনকর নেই, সুচিত্রা মিত্র নেই, নিলুফার ইয়াসমিন নেই। চলে গেলেন পাপিয়া সারোয়ার.... নিউজ ব্যাংক বাংলা  : বয়স বাড়ার একটা...
- Advertisement -spot_img

More Articles Like This

- Advertisement -spot_img