নিউজ ব্যাংক বাংলা, চট্টগ্রাম :
উত্তপ্ত হয়ে উঠছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়-চবি পরিস্থিতি। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক কর্তৃক রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থীর ধর্ষণ চেষ্টার প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে মানববন্ধন-অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেছেন। তারা মুহুর্মুহু শ্লোগান তুলেছেন, ‘রসায়নের আঙিনায় / ধর্ষকের ঠাঁই নাই ‘ ।
বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা এও স্লোগান তুলেছেন, ‘ধর্ষকের চামড়া/ তুলে নেবো আমরা ‘ , ‘আমার বোনের সম্মানহানি / মানি না মানবো না’। অভিযুক্ত শিক্ষকের নাম উল্লেখ করে স্লোগান অব্যাহত রাখছেন শিক্ষার্থীরা।
চবি’র রসায়ন বিভাগের ছাত্রী ধর্ষণ চেষ্টায় একই বিভাগের শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগকে ঘিরে অভিভাবকরাও উদ্বিগ্ন। অন্য শিক্ষকরা বিব্রত।
ওই শিক্ষার্থীর সাথে শিক্ষকের ম্যাসেঞ্জার চ্যাট এর মধ্যেও শিক্ষকের অনৈতিকতার আলামত মিললেও বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন নিপীড়ন বিষয় সেলে দায়ের করা অভিযোগের কোন ফলাফল পাওয়া যায়নি। তবে কয়েকবার বৈঠক করেছে সেলটি । এদিকে, অভিযোগকারী শিক্ষার্থী NEWS BANK BANGLA . COM নিউজ ব্যাংক বাংলা ডট কমকে শনিবার বিকেলে বলেন , বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আজ ও আগামীকাল সোমবারের মধ্যে এ ঘটনার বিহিত করার আশ্বাস দিয়েছেন। ’নতুবা আইনানুগ ব্যবস্থা নেবেন বলেও জানান এই শিক্ষার্থী। অভিযোগকারী শিক্ষার্থী নিউজ ব্যাংক বাংলাকে ঘটনার সবিস্তার তুলে ধরেছেন ।
–নিউজটির বাকি অংশ দেখুন নীচের লিংক ভিডিও এর পর
- চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় পরিস্থিতি সর্বশেষ : চোখ রাখুন নিচের ভিডিও লিংকে-
চোখ রাখুন নিউজ ব্যাংক বাংলা ডট কমে —
অন্যদিকে, বিক্ষোভ কর্মসূচি শুরু করা শিক্ষার্থীরা আজ রবিবার সকাল সাড়ে দশটায় জানান, আজকের মধ্যেই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অভিযোগের ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট সিদ্ধান্ত না আসলে আইনগত পদক্ষেপের পাশাপাশি আন্দোলন কর্মসূচি বৃহত্তর রূপ ধারণ করার সর্বোচ্চ প্রস্তুতি চলছে। ’
তবে বেলা সাড়ে এগারোটার টার দিকে সংশ্লিষ্ট শিক্ষকদের সাথে এক দফা বৈঠক শেষে বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য ড. শিরীন আখতার বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের অবস্থান কর্মসূচিতে এসে বক্তব্য রাখলে শিক্ষার্থীরা অনেকটা ম্রিয়মাণ হন।
এদিকে অভিযোগকারী শিক্ষার্থী সকাল দশটা থেকেই ঘটনার বিচার চেয়ে প্রশাসনিক ভবনের সামনে অপেক্ষা করতে থাকন । সর্বশেষ এরিপোর্ট লেখা পর্যন্ত চবি কর্তৃপক্ষ তাকে ডেকে বিচার প্রক্রিয়ায় কোন আশাবাদের কথা না বললেও উপাচার্যের বক্তব্যের পর তিনিও খানিকটা আশ্বস্ত হন।
নিউজটির বাকি অংশ দেখুন নীচের লিংক ভিডিও এর পর-
জামায়াত..শিবিরের রাজনীতি, আওয়ামীলীগ ও নির্বাচন নিয়ে আলোচিত টকশো :
মেজর জেনারেল অব ইব্রাহিম যা বললেন,
জানতে হলে লিংক চাপুন –
( ভালো লাগলে বন্ধুদের জানাতে লাইক ও শেয়ার দিন, প্লিজ ! )
উপাচার্য বিক্ষোপকারীদের শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ” আমার বিশ্ববিদ্যালয়ে আমার ছাত্রীর গায়ে আঁচড় লাগবে তা সহ্য করা হবে না । ‘
আন্দোলন রত ছাত্র-ছাত্রীদের উদ্দেশ্যে ড. শিরীন আখতার আরও বলেন, “অভিযুক্ত কে তোমরা সবাই জানো ।কাজেই বিচার প্রক্রিয়ার সর্বোচ্চ সাজা নিশ্চিতে আইনি পরামর্শ চলছে। তদন্তকারীদের বিস্তৃত তদন্তের জন্য অন্তত পাঁচ থেকে সাত দিন সময় লাগবে।’
উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন ক্ষতি না করে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে শিক্ষার্থীদের অবস্থানস্থল ত্যাগ করেন । সর্বশেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী প্রশাসনিক ভবনের দুয়ারে অপেক্ষমান এবং বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা স্লোগান মুখর অবস্থান অব্যাহত রেখেছেন। পরিস্থিতি আরো উত্তপ্ত হওয়া বা অঘটন শংকায় পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে লাগামহীনভাবে একের এর পর এক অঘটন ঘটছে। কখনো শিক্ষার্থীদের রাজনৈতিক অরাজনৈতিক সংঘর্ষ, কখনো উপাচার্যের বিরুদ্ধে শিক্ষক ও কর্মচারী নিয়োগে ব্যাপক দুর্নীতি স্বজনপ্রীতি ও পারিবারিকী করণের অভিযোগে, কখনো শিক্ষক সমিতি ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদী কর্মসূচিতে উত্তপ্ত হয়ে উঠছে এই বিশ্ববিদ্যালয়। উপাচার্যের মেয়াদও শেষ হয়ে গেছে কয়েক মাস আগে। নতুন করে উপাচার্য নিয়োগ না দেওয়া পর্যন্ত এই সময়কালে খোদ শিক্ষক কর্তৃক শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ চেষ্টার এই ভয়াবহ অভিযোগে এখন ফের উত্তপ্ত হলো বাংলাদেশের আলোচিত ও সবুজে ঘেরা নৈসর্গিক এই বিশ্ববিদ্যালয়।
ছাত্রী ধর্ষণ চেষ্টা অভিযোগের বিষয়ে গভীরভাবে তদন্ত করছেন জানিয়ে গণমাধ্যমে সেলটি পরশু শুক্রবারও বলেছে, বিষয়টি স্পর্শকাতর হওয়ায় তদন্তে আরো সময় দরকার আছে ।
এদিকে সামাজিক মাধ্যমেও অভিযুক্ত শিক্ষকের মুন্ডুপাত চলছেই । প্রাক্তন শিক্ষার্থী ও ভুক্তভোগীদের অনেকেই বিক্ষোভ প্রকাশ করেছেন । অভিযোগকারি শিক্ষার্থীর সহপাঠী শিক্ষার্থীরা চাইছেন , মারাত্মক ট্রমায় থাকা ওই শিক্ষার্থী যেন স্বাভাবিক জীবন পান। ধর্ষণ চেষ্টা কিংবা শ্লীলতাহানির দ্রুত সর্বোচ্চ বিচার চান তারা। বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন নিপীড়ন সেলের বৈঠক শেষে শুক্রবার রাত আটটার দিকেই সেলের সদস্যরা কিছু সময় চান। গত বুধবার উপাচার্য শিরীণ আখতারের কাছে নিজ বিভাগের শিক্ষকের বিরুদ্ধে লিখিতভাবে যৌন হয়রানির অভিযোগ করেন এক শিক্ষার্থী। অভিযোগটি সম্পূর্ণরূপে অস্বীকার করেছেন অভিযুক্ত শিক্ষক।
এদিকে সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে জানা যায়, অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে আগেও বিভিন্নভাবে শিক্ষার্থীরা অভিযোগ তুলেন। তবে সেই সব অভিযোগ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কানে পৌঁছার আগেই নানাকারণে মিইয়ে যায় ।
শিক্ষার্থী তার লিখিত অভিযোগে জানান, অভিযুক্ত শিক্ষকের তত্ত্বাবধানে থিসিস করছিলেন তিনি।
তিনি বলেন,”থিসিস চলাকালীন সময়ে আমি উক্ত শিক্ষক দ্বারা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্নভাবে যৌন হয়রানির শিকার হই৷ সর্বশেষ ১৩ জানুয়ারি, ২০২৪ তারিখে আনুমানিক দুপুর ১২ টার দিকে কেমিক্যাল আনার বাহানা করে আমাকে তার রুমে ডেকে পাঠান। আমি তার রুমে ফ্রিজ খুলে কেমিক্যাল বের করা রত অবস্থায় তিনি আমাকে পিছন থেকে জোরপূর্বক জড়িয়ে ধরে তার হাত ও ঠোঁট দিয়ে আমার গোপনাঙ্গে স্পর্শ করেন। এমতাবস্থায় আমি তাকে ধাক্কা মেরে বের হয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে তিনি রুমের দরজা আটকে আমাকে পুনরায় জোরপূর্বক জড়িয়ে ধরে আমার গোপনাঙ্গে স্পর্শ করেন। আমি উনাকে পুনরায় ধাক্কা মেরে দরজার লক খুলে কোনোরকমে পালিয়ে বাঁচতে সক্ষম হই। “
শিক্ষার্থী আরো বলেন, ” ১৪ তারিখ তিনি আমাকে ও আমার ল্যাবের বাকি দুজন মেয়েকে তার রুমে ডেকে পাঠান এবং বলেন দরজাটা চাপিয়ে দিতে। তারপর তিনি আমাদের তার সাথে সমঝোতায় আসার প্রস্তাব দেন৷ আমরা তার উক্ত প্রস্তাবে রাজি না হয়ে রুম থেকে বের হয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে তিনি তার চেয়ার থেকে উঠে দরজায় লক দিয়ে দরজা আগলে দাঁড়ান যেনো আমরা বের হতে না পারি। তিনি এভাবে প্রায় ২৫ মিনিট আমাদের আটকে রাখেন। অত:পর আমাদের ৩ জনের মধ্যে একজন তাকে বলেন যে, আমি অনেক অসুস্থ বোধ করছি। এমতাবস্থায় তিনি আমাদের তার রুম থেকে বের হতে দিতে বাধ্য হন। আমি উক্ত অপরাধীর স্থায়ী বহিষ্কার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।”