নিউজ ব্যাংক বাংলা, চট্টগ্রাম:
নগর ও জেলা সহ বৃহত্তর চট্টগ্রামের অগুণতি বিচারপ্রার্থী মানুষ আসেন চট্টগ্রাম আদালত ভবনে। প্রতিদিনই বাড়ে ভীড়। চট্টগ্রাম বিভাগের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা হাজার হাজার বিচারপ্রার্থী মানুষকেই সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত আদালত ভবনে অবস্হান করতে হয়। কিন্তু আদালত ভবনে প্রয়োজনীয় বিশ্রামাগার না থাকায় তাদের সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হয়। বিশেষ করে বয়স্ক, নারী ও শিশু বিচারপ্রার্থীদের আদালত ভবনে উপযুক্ত পর্যাপ্ত পরিবেশ না থাকায় অবর্ণনীয় কষ্ট সহ্য করতে হয়। তাদের কষ্ট লাঘবের জন্য কর্তৃপক্ষ মাঝে মধ্যে উদ্যোগ গ্রহণ করলেও তা ছিল অপ্রতুল।
সম্প্রতি বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের উদ্যোগে সারা দেশের অন্যান্য জেলার ন্যায় চট্টগ্রাম আদালত ভবণ প্রাঙ্গনে স্হাপিত হয় বিচারপ্রার্থী মানুষের বিশ্রামাগার ‘ন্যায়কুঞ্জ’ নামক একটি ভবন।দুই হাজার বর্গফুট আয়তনের এই ন্যায়কুঞ্জে বিচারপ্রার্থী মানুষের আছে বসার সু-ব্যবস্হা। আছে পুরুষ ও মহিলাদের জন্য পৃথক টয়লেট। এছাড়াও সমাতৃদুগ্ধপান কর্ণার এবং একটি ক্যাফেটেরিয়াও রয়েছে ।
তবে আইনজীবী ও বিচার প্রার্থীদের প্রত্যাশা আছে আরো অনেক । তাঁরা চান আরো বড় পরিসর। নাগরিক সমাজের কন্ঠেও উঠে এলো এমন দাবি ।
চট্টগ্রাম নাগরিক উদ্যোগের আহবায়ক ও চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি রিয়াজ হায়দার চৌধুরী এবং সনাতনী সম্প্রদায়ের নেতা সুমন দেবনাথের সাথে কথা হলো আদালত অঙ্গনে। তারাও বললেন, ন্যায়কুঞ্জ সত্যিকার অর্থে বিচারপ্রার্থীর বিশ্রামের জন্য ভরসার স্হান হয়েছে ঠইক’ই, তবে চট্টগ্রামের মত বিভাগীয় শহরে এর পরিসর আরো বাড়ানো দরকার।
মুক্তিযোদ্ধা কলামিস্ট মুহাম্মদ ইদ্রিস আলীও জানালেন অভিন্ন মত। তিনি মনে করেন, প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ সেবাপ্রার্থী হিসাবে আদালত ভবনে আসেন। পরিসর আরো বাড়ানো হলেই ন্যায়কুঞ্জ স্হাপনের উদ্দেশ্য পুরোটা অর্জন সম্ভব হবে।
এদিকে, গণপূর্ত বিভাগের তত্ত্বাবধানে চট্টগ্রামের আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত ‘ন্যায়কুঞ্জ’টি নির্মাণ হয়, যা গত বছরের ২৫ অক্টোবরে উদ্বোধন করেন তৎকালীন প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী । ভার্চুয়ালি এটির উদ্বোধন করা হয় সেদিন। অতঃপর বিচারপ্রার্থী মানুষের ব্যবহারের জন্য উম্মুক্ত করা হয়।
নিউজটির বাকি অংশ দেখুন নীচের লিংক ভিডিও এর পর-
ঢাকার বাইরের মানুষের অধিকার নিয়ে একটি আলোচিত বক্তৃতা :
প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে প্রশ্ন । জানতে হলে লিংক চাপুন –
( ভালো লাগলে বন্ধুদের জানাতে লাইক ও শেয়ার দিন, প্লিজ!
সরেজমিন ন্যায়কুঞ্জ ভবনের ভেতরে লক্ষ্য করা যয়, সাধারণ বিচারপ্রার্থী সহ বেশ কয়েকজন আইনজীবী ন্যায়কুঞ্জের ক্যাফেটেরিয়ায় খেতে খেতে মামলা নিয়ে আলোচনা করছেন।
একটি পারিবারিক মামলার বাদী আকলিমা বেগম ফটিকছড়ি থেকে এসেছেন আদালত ভবনে । তিনি বলেন, মামলার প্রতি ধার্য্য তারিখ তিনি তার দুগ্ধ্যপোষ্য শিশুকে নিয়ে আদালতে আসেন। কিন্তু শিশুকে দুধ পান করানোর কোন নির্ধারিত স্হান না থাকায় এবং টয়লেট ব্যবহারের কোন সুবিধা না থাকায় তাকে অনেক বিড়ম্বনার শিকার হতে হয়েছে। ন্যায়কুঞ্জ চালু হওয়ায় তিনি এই বিড়ম্বনা থেকে পরিত্রাণ লাভ করেছেন বলে জানান।
বিচার প্রার্থী ষাটোর্ধ ইউছুফ আলী এবং তরুণ মোহাম্মদ হাসমত জানান, ২০১২/১৩ সাল থেকে তারা মামলার কাজে নিয়মতি আদালত প্রাঙ্গণে আসছেন। কিন্তু আদালত প্রাঙ্গণে বিশ্রামাগার ও পরিচ্ছন্ন টয়লেটের সু-ব্যবস্হা না থাকায় বয়স্ক কিংবা তরুণ যে কারোরই দুর্ভোগ পোহাতে হত। ন্যায়কুঞ্জ স্হাপিত হওয়ায় তাদের সে দুর্ভোগ কিছুটা লাঘব হয়েছে।
চট্টগ্রাম জেলা জজ আদালতের নাজির এনামুল হক আকন্দ (বাহার) বলেন, জাজ-ইন-চার্জ নেজারত এর সার্বিক তত্ত্বাবধানে ‘ন্যায়কুঞ্জে’র সার্বিক বিষয়াবলি দেখভাল করা হয় এবং প্রতিদিন পরিস্কার পরিচ্ছন্ন পরিবেশে যাতে বিচারপ্রার্থীরা ‘ন্যায়কুঞ্জ’ ব্যবহার করতে পারেন সে বিষয়ে সজাগ দৃষ্টি রাখা হয়।
আদালত প্রাঙ্গনে আগত বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ সহজেই ‘ন্যায়কুঞ্জ’ ব্যবহারের সুযোগ লাভ করায় সন্তোষ প্রকাশ করেন।