শুরু হলো দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন
চলন্ত ট্রেনে জ্বলন্ত মানুষ অঙ্গার হয়ে যাওয়ার চিত্র দেখে দেশ ও বিদেশে অনেকের মানসিক অস্বস্তি শুরু হওয়া ভয় ও আতঙ্কের পরিবেশে শুরু হলো আজ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ২০২৪ …..
চলন্ত ট্রেনে জ্বলন্ত মানুষ অঙ্গার হয়ে যাওয়ার চিত্র দেখে দেশ ও বিদেশে অনেকের মানসিক অস্বস্তি শুরু হওয়া ভয় ও আতঙ্কের পরিবেশে শুরু হলো আজ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ২০২৪ । আজকের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিপুল বিজয়ের আভাষ কিংবা সম্ভাবনা, সামগ্রিক পরিবেশের কারণে আগে থেকেই উচ্চারিত ।
নির্বাচনের পরে আওয়ামীলীগ পুণরায় সরকারের দায়িত্ব গ্রহণ করলে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পাঁচবারের মতো শপথ নেবেন বঙ্গবন্ধু কন্যা ও আওয়ামীলীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
আজকের জাতীয় নির্বাচনটি বাংলাদেশের অস্তিত্ব ও মর্যাদা রক্ষার নির্বাচন হিসেবে আলোচিত। গণতন্ত্রের ধারায় বিএনপি সহ কয়েকটি দলের বর্জনের মধ্য দিয়ে হলেও আজকের নির্বাচনকে ‘সংসদীয় বাধ্যবাধকতা’র নির্বাচন বলে নির্বাচন কমিশন, আওয়ামী লীগ সহ দায়িত্বশীল অনেকেই মন্তব্য করেছেন।
দেশজুড়ে কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে চরম ঝুঁকির ও বাধ্যবাধকতার এই নির্বাচনে ভোট গ্রহণ শুরু হল ।
এই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ টানা চতুর্থবারে ক্ষমতায় আসবার সম্ভাবনার কথা রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা গেল টানা ক’দিন বেশ জোরেশোরেই আলোচনা শুরু করেছেন । আওয়ামী লীগকে অবশ্য এর জন্য বেশ বেগ পোহাতে হয়েছে। জাতীয় আন্তর্জাতিক চাপ-ষড়যন্ত্র দৃঢ়চিত্তে মোকাবেলা করতে হয়েছে।
সরকার প্রধান হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থেকেই , সংসদ না ভেঙেই এবার জাতীয় নির্বাচন হচ্ছে। আজ ভোটগ্রহণের মধ্য দিয়ে জনস্বীকৃতি পাওয়া দলকেই নির্বাচিত সরকার ক্ষমতা হস্তান্তর করবে। স্মরণকালে এটি নজিরসৃষ্টিকারি ।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এবারের নির্বাচনে জোট- মহাজোটের হিসেবের বাইরেও দলের অভ্যন্তর থেকেও স্বতন্ত্র প্রার্থীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় উৎসাহিত করেছে । যদিও বাহ্যত বিএনপিবিহীন নির্বাচনে ভোটার অংশগ্রহণ বাড়ানোর জন্যই আওয়ামী লীগ এটি করে কৌশল নিয়েছে বলে বলা হলেও মনে করা হলেও এর মধ্য দিয়ে নির্বাচন বেশ চাঙ্গাও হয়ে উঠেছে। যদিও
তত্ত্বাবধায়ক সরকার এর মাধ্যমে নির্বাচন পরিচালনার ইস্যুতে বিএনপি সহ সমমনারা নির্বাচন ‘বয়কট’ করায় কোথাও কোথাও সংঘাত অঘটন ঘটে আসছে ক’দিন ।
আজ নির্বাচন দিনেও বিএনপির ডাকা হরতাল অব্যাহত রয়েছে।
লন্ডনে থাকা বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের হয়ে দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী ভিডিও বার্তায় নির্বাচন বয়কট করার জন্য দেশবাসীকে অনুরোধ জানিয়েছেন। বিএনপি’র মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী সহ কয়েকজন শীর্ষ নেতা কারাগারে রয়েছেন।
বিএনপি’র পক্ষ থেকে এই নির্বাচন চলাকালীন সময় পর্যন্ত প্রায় ৩০ হাজার নেতাকর্মী কারাবন্দি থাকার দাবি করা হলেও সরকারি পক্ষ থেকে তা অস্বীকার করা হয়েছে। উপরন্ত নির্বাচনী কেন্দ্রে, বাসে ও রেল লাইনে আগুন সহ নাশকতার ঘটনায় ধরা পড়েছেন কয়েকজন বিএনপির কর্মী । তারা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে জবানবন্দিও দিয়েছেন। আজও বিভিন্ন স্থানে অঘটন আশঙ্কার মধ্য দিয়েই ভোট চলা অবস্থায় অব্যাহত রয়েছে বিএনপি’র হরতাল। যদিও সাম্প্রতিক সময়ের অন্য হরতাল গুলোর মতই সকাল থেকে তা এখনো নিরুত্তাপ’ই।
নির্বাচনী উৎসবমুখরতা কিংবা প্রতিদ্বন্দ্বিতা মুখরতার বাইরেও জ্বালা পোড়াও আগুন সন্ত্রাস প্রশাসনকে অস্থির করে তুলেছে । যদিও ক্ষমতাসীন দল হিসেবে আওয়ামীলীগ এই আগুন সন্ত্রাসের জন্য বিএনপি তথা সাম্প্রতিক হরতাল-অবরোধ আহবানকারী দলকেই দায়ী করছে।
অন্যদিকে বিএনপি এই ঘটনার জন্য সরকারকেই নানাভাবে দোষারোপ করছে।
এইসব ঘটনার মূল উৎপাঠন করতে এবং সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতে প্রশাসন জোর ভূমিকা অব্যাহত রাখলেও থেমে নেই দুর্বৃত্তরা ।
লেখাটির বাকি অংশ দেখুন নীচের লিংক/ছবি/ভিডিও এর পর-
জামায়াত..শিবিরের রাজনীতি, আওয়ামীলীগ ও নির্বাচন নিয়ে আলোচিত টকশো :
মেজর জেনারেল অব ইব্রাহিম যা বললেন,
জানতে হলে লিংক চাপুন –
( ভালো লাগলে বন্ধুদের জানাতে লাইক ও শেয়ার দিন, প্লিজ ! )
আজ ভোট সম্পাদনের পর আওয়ামীলীগ পুণরায় সরকারের দায়িত্বশীল হলে আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের অনেক চাপ মোকাবেলা করা সহজ হবে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন ।
লেখাটির বাকি অংশ দেখুন নীচের লিংক/ছবি/ভিডিও এর পর-
ঢাকার বাইরের মানুষের অধিকার নিয়ে একটি আলোচিত বক্তৃতা :
প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে প্রশ্ন । জানতে হলে লিংক চাপুন –
( ভালো লাগলে বন্ধুদের জানাতে লাইক ও শেয়ার দিন, প্লিজ!
এবারের নির্বাচনের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো: মাঠের বিরোধী দল হিসেবে আলোচিত বিএনপির বিরোধিতা এবং ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগের সাথে চলতি সংসদের বিরোধীদল জাতীয় পার্টির সাথে কিংবা জোট সাথীদের ক্ষেত্রে নির্বাচনী ঐক্যে আসন বন্টনে উল্লেখযোগ্য ভাবে টানা পোড়েন দেখা দেয়া।
একই সাথে আমেরিকা সহ ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও বিভিন্ন রাষ্ট্র এবারের জাতীয় নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক করতে শুরু থেকেই চাপ প্রয়োগ করে আসা।
এবার স্মরণকালে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক বিদেশি পর্যবেক্ষকও নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। সর্বোচ্চ সর্তকতা রয়েছে প্রশাসনের । একই সাথে ক্ষমতাসীন দলের অভ্যন্তর ও দলীয় শুভার্থীদের মধ্য থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থিতায় উৎসাহিত করা। এসব এবারে নির্বাচনকে বৈশিষ্ট্য মন্ডিত করে তুলেছে।
এদিকে দল অভ্যন্তর থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থীতায় উৎসাহিত করার সিদ্ধান্তের কারণে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগকে নিকট ভবিষ্যতে অন্তর্কোন্দলে চরম বেকায়দায় পড়তে হতে পারে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে।
তবে এবারের নির্বাচনের মূল শক্তি হলেন শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগ সভাপতি হিসেবে শুধু নন, বঙ্গবন্ধুর এই কন্যা পরপর টানা তিনবারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে , সর্বমোট চতুর্থবার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ক্ষমতায় সাফল্যের দু’দশক আছে তাঁর।
প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তাঁর সময়কালে পার্বত্য চট্টগ্রামের শান্তি চুক্তি থেকে শুরু করে বাংলাদেশের স্যাটেলাইট উড্ডয়ন, সমুদ্রসীমা অর্জন, কর্ণফুলী নদীতে টানেল নির্মাণ , পদ্মা সেতু নির্মাণ , গভীর সমুদ্র বন্দর, এলিব্রেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, মেট্রো ট্রেন চালু, ঢাকা থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত ট্রেন যোগাযোগ চালু সহ সামগ্রিক অর্জন’ই ঘটেছে । বেড়েছে বাংলাদেশের বৈশ্বিক মর্যাদাও।
বাংলাদেশের অভূতপূর্ব এই অপ্রতিরোধ্য যাত্রা অব্যাহত রাখতেই শেখ হাসিনা ও তাঁর দেশ বিদেশের অনুসারীরা আওয়ামীলীগকেই ফের ক্ষমতায় দেখতে চান ।
এদিকে, এবারের নির্বাচনে ক্ষমতাসীনদের থিম যেন ‘উন্নয়ন ও প্রবৃদ্ধি’র অব্যাহত যাত্রা এবং স্মার্ট বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা। আর বয়কটকারি বিএনপি ও সমনাদের টার্গেট আওয়ামী লীগ হটানো।
আজকের নির্বাচন দিনে আওয়ামী লীগের লক্ষ্য বিপুল ভোটার উপস্থিতি, অন্যদিকে বিএনপি’র লক্ষ্য ভোটকেন্দ্রে ভোটার না যাওয়া।
শুরু থেকেই বিএনপি এই নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারবিহীন ‘হতে না দেওয়ার’ হুঁশিয়ারি দিয়ে আসলেও তাদের সকল আন্দোলন আল্টিমেটাম ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়েছে।
এখন আজকের নির্বাচনের পরে বিএনপি রাজপথে নতুন কোন ভাষায় এগোবে, নাকি আন্তর্জাতিক মহলের কাছে ফেলে আসা দিনগুলোর মত আবেদন আর্জি নিয়ে কাটাবে, তা’ই এখন দেখবার বিষয়।
( রিয়াজ হায়দার চৌধুরী :
সম্পাদক,
নিউজ ব্যাংক বাংলা এবং
সাবেক সভাপতি/সাধারণ সম্পাদক,
চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়ন )